জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার আয়োজনে “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মোঃআনজার শাহ

সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে “সাংবাদিক সুরক্ষা আইন” প্রণয়নের দাবিতে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৪ আগস্ট ২০২৫) সকাল ১০টায় রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় নীতি নির্ধারক পরিষদের সদস্য মুহম্মদ মনজুর হোসেন তাঁর বক্তব্যে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বলেন, “সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন কোনো সাধারণ আইন নয়। এটি আমাদের অস্তিত্বের সুরক্ষা, আমাদের পেশার মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক সমাজে সত্য বলার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা।”

তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বহু সাংবাদিক হামলা, হয়রানি, মিথ্যা মামলা এমনকি প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়েছেন। সত্য প্রকাশের অপরাধে সহকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা ভয় পাই না, কিন্তু নিরাপত্তা চাই। আমরা চুপ থাকি না, কিন্তু সম্মান চাই। আমরা মাথা নত করি না, কিন্তু ন্যায় চাই।”

সভায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—

সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা

তথ্য সংগ্রহে বাধা দেওয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য করা

হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা

সাংবাদিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন

জরুরি সহায়তা তহবিল প্রতিষ্ঠা

প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

নারী সাংবাদিকদের জন্য পৃথক নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়ন

মুহম্মদ মনজুর হোসেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারা নিয়েও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই আইনের কিছু অংশ সাংবাদিকদের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে, যা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।

সংস্থার মহাসচিব আলমগীর গণি বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা মানে গণতন্ত্রের নিরাপত্তা। যেখানে সাংবাদিকরা নিরাপদ থাকবেন, সেখানে সত্য প্রকাশিত হবে এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত হবে।

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা থেকে দাবি জানানো হয়, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন যেন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থেকে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়। থানায়, আদালতে ও প্রশাসনে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।

সভা শেষে সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ আবুল বাসার মজুমদার ঘোষণা দেন— সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ, যুক্তিনির্ভর ও গণতান্ত্রিক।

বক্তব্যে শেষ মুহূর্তে অত্র সংগঠনে সভাপতি আছিয়া বেগম বলেন, “সত্যের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে, সাংবাদিকতার মর্যাদা রক্ষার পক্ষে আমরা আছি, থাকব এবং জয়ী হব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *