“ভুল প্রমাণিত হলে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইব” — বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন ফজলুর রহমান

মোঃ ইসলাম উদ্দিন তালুকদার :

বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়, যার জেরে দল থেকেও তাকে শোকজ করা হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) এ নিয়ে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন তিনি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ফজলুর রহমান দাবি করেন, তার বক্তব্যের পুরো প্রসঙ্গ বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কোনো ভাইরাল হয় নাই। ইউটিউবে অনেক কিছু করা যায়। আমার পুরো বক্তব্যটা দরকার, এই দুই লাইনের হেডিং দিয়ে কিছু বোঝা যাবে না। কোথায়, কখন, কী বলেছি—সবটা সামনে আনতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি ভুল বলেছি, তাহলে আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাইব। কিন্তু ইউটিউবের একটা লাইন দিয়ে সেটা বিচার করা যাবে না। আমার পুরো বক্তব্যটা শুনে তারপর বিচার করতে হবে।”

ফজলুর রহমান দাবি করেন, যারা তার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কথা কাটছাঁট করেছে। তার ভাষ্য, “আমি যা বলেছি, তা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবং দলীয় অবস্থান থেকেই বলেছি। কেউ যদি সেটা ভুল প্রমাণ করতে পারে, আমি বিনা দ্বিধায় ক্ষমা চাইতে রাজি আছি।”

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক টকশোতে ফজলুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে জামায়াতে ইসলামি ষড়যন্ত্র করে আসছে। ৫ আগস্টের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, সেই কালো শক্তির নাম জামায়াতে ইসলামি। তাদের অগ্রবর্তী সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। যারা এই ঘটনার অভিনয় করেছে, আমি তাদের নেতা বলতে চাই না, অভিনেতা বলব। আলবদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলামী—আমরা ভেবেছিলাম তারা পূর্বপুরুষের পরাজয়ের গ্লানি ভুলে গেছে। কিন্তু না, সেই গ্লানি আজ দ্বিগুণ হয়ে ফিরে এসেছে।”

এই মন্তব্য প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। বিএনপি কেন্দ্র থেকেও তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়, যার জবাব যথাসময়ে দলকে দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, ফজলুর রহমানের বক্তব্যের প্রতিবাদে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় তার বাসার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ‘জুলাই আন্দোলন’-সংশ্লিষ্ট ছাত্র ও জনতা। সোমবার দুপুরে সেখানে বিক্ষোভের পাশাপাশি নামাজ আদায় করতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।

‘বিপ্লবী ছাত্র জনতা’, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’, ‘জুলাই রাজবন্দী’সহ কয়েকটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *