এস এম নুর:
গাজীপুর মহানগরীর গাছা কুনিয়া তারগাছ এলাকায় দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। বাদী আবু হানিফ জানান, কোর্টে মামলা করলে মাননীয় আদালত ও সহকারী কমিশনার ভূমি এর নির্দেশে গাছা ভূমি অফিস তদন্ত পায়। সরোজমিনে তদন্তে স্থানীয় মোঃ জাকির হোসেন ও মোঃ আলকাছ মিয়া ভূমি অফিসারের সম্মুখে এই জমি বাদী মোঃ হানিফ মিয়ার বলে সাক্ষী দেন। এই তদন্ত রিপোর্ট কোর্টে জমা পড়ে।
মাননীয় আদালত দুজন সাক্ষী চায়। তখন বাদী হানিফ জাকির হোসেন ও মোঃ আলকাছ মিয়ার কাছে জানায়। বিবাদীর কুপরামর্শে সাক্ষীরা কয়েকদিন পরেই মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে বাদী আবু হানিফের কাছে। সাক্ষীরা বলেন, চাঁদা না দিলে বিবাদী আবুল কাশেমের পক্ষে বাদী হানিফের বিরুদ্ধে কোর্টে সাক্ষী দেব, এবং বাদীকে ভয়-ভীতি দেখায়।
গাছা ভূমি অফিস জানান, রাজস্ব সার্কেল, গাজীপুর কর্তৃক পিটিশন মোকদ্দমা নং-৭৭৯/২০২৪ এর বিবাদমান ভূমি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। গাছা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, কুনিয়া মৌজার এসএ ৯১, আরএস ২৭৩ নং খতিয়ানের এসএ ৫৩৭, আরএ ৭৯২ নং দাগের ০.০৪২৯ একরের কাতে ০.০১১৯ একর নালিশী ভূমি।
১ম পক্ষ মোঃ আবু হানিফ বিরোধীয় দাগে নালিশী ০.০১১৯ একর ভূমিসহ মোট ০.০৪২৯ একর পিতার দেওয়া দলিলে মালিক। বিরোধীয় মোট ০.০৪২৯ একর ভূমির মধ্যে ০.০৩১০ একর ভূমি উত্তর-দক্ষিণ বাউন্ডারী করে ১ম পক্ষ দখলে আছেন এবং অবশিষ্ট ০.০১১৯ একর (প্রায় ৯৬ ফুট লম্বা এবং ৫ থেকে ৫.৫ ফুট প্রস্থ) ভূমি, যা ১ম পক্ষের বাউন্ডারী ওয়াল বাহিরে পশ্চিম পাশে বালু ভরাটকৃত অবস্থায় আছে।
উপস্থিত সাক্ষী:
১) মোঃ জাকির হোসেন, পিতা- মৃত সোনা মিয়া
২) মোঃ আলকাছ মিয়া, পিতা- মৃত লাল মিয়া
উভয় কুনিয়া, গাছা, গাজীপুর হতে সাক্ষীরা গাছা ভূমি অফিসে উপস্থিত হয়ে জানান, ১ম পক্ষের দাবীকৃত ০.০১১৯ একর ভূমি ১ম পক্ষ বালু ভরাট করেছেন এবং বাউন্ডারী ওয়াল করার সময় উহা ছেড়ে বাউন্ডারী করেছেন।
১ম পক্ষ হানিফ জানান, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সকলে এই জমি নকশা দূরবীন দিয়ে স্থানীয় সার্ভেয়াররা সঠিক ক্যালকুলেশন করে একমত হয়ে রায় দিয়েছেন। দ্বিতীয় পক্ষ কাশেম এই রায় প্রাথমিকভাবে মেনে নিয়ে পরবর্তীতে রায় অমান্য করে আবার জামেলা পাকায়। এতে বাদী নিরুপায় হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন।
এ বিষয়ে জাকির ও আলকাছের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, “আমরা দুজন সঠিক সাক্ষী দিয়েছি, যা বলার কোর্টে বলব। চাঁদা চাওয়ার বা বিপক্ষে সাক্ষী দেওয়ার বিষয়টি আমরা অস্বীকার করি, এ বিষয়ে আপনাকে আর কিছু বলতে চাই না।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, এরা মানুষকে বিপদে ফেলানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে, টাকার বিনিময়ে বেচাকেনা হয়। সাক্ষীরা আবু হানিফের পক্ষে সঠিক সাক্ষী দিয়ে আবার টাকার জন্য বিপক্ষে সাক্ষী দেয়। আদালত কিভাবে মেনে নিবে আমরা বুঝতে পারছি না। যেখানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিচার করে দিয়েছেন, সেখানে কাশেম বারবার মানুষকে অপমানিত করে এবং মিথ্যা সাক্ষীর জন্য সুকৌশলে সাক্ষী ভাড়া করে। এর একটি প্রতিকার দরকার। আমরা মাননীয় আদালতের কাছে ন্যায্য বিচার চাই।