ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে সহকারী প্রকৌশলী হরাদন দে’র বিরুদ্ধে ঘুষ–সিন্ডিকেটের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়নকে ঘিরে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ—দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী হরাদন দে ঘুষ, রাজনৈতিক প্রভাব ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডার বাণিজ্য এবং বিল আটকে অর্থ আদায়ের সঙ্গে জড়িত।

অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের সুবিধা দিতে তিনি দরপত্রের গোপন তথ্য সরবরাহ করেন। ঠিকাদারদের দাবি, ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষের বিনিময়ে দরপত্রে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। আবার, প্রকল্প অনুমোদনের পর “নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড” প্রদানেও ১ থেকে ১.৫ শতাংশ অতিরিক্ত ঘুষ দাবি করা হয়।

কাজ শেষ হওয়ার পর বিল পরিশোধেও বাধা তৈরি হয়। অভিযোগ অনুসারে, বিলের চেক দীর্ঘদিন আটকে রেখে অলিখিত নিয়মে প্রায় ৩ শতাংশ ঘুষ আদায় করা হয়। যারা এই শর্তে রাজি হন, তাদের বিল দ্রুত নিষ্পত্তি হয়; আর যারা অস্বীকৃতি জানান, তাদের ফাইল আটকে থাকে মাসের পর মাস।

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান—“টেন্ডার কমিটি থেকে শুরু করে বিল পরিশোধ—সব জায়গায়ই ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ এগোয় না। রাজনৈতিক প্রভাব ও সিন্ডিকেটের কারণে আমরা বাধ্য হই নিয়ম বহির্ভূত অর্থ দিতে।”

সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সদর উপজেলায় জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও মেরামতের নামে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু নিম্নমানের কাজ ও অনিয়ম–দুর্নীতির কারণে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা প্রকৌশলী হরাদন দে বলেন—“আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক। আমি নিয়ম মেনে কাজ করছি এবং কোনো অন্যায় করিনি। আমি কারও ভয় করি না।”

অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয় মহলে প্রশ্ন উঠেছে—দীর্ঘদিন ধরে একই পদে থেকে একের পর এক অভিযোগ সত্ত্বেও কেন তিনি অক্ষত থাকছেন? সংশ্লিষ্ট মহলের মন্তব্য—রাজনৈতিক আশীর্বাদপ্রাপ্ত বলেই কি হরাদন দে একই জায়গায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *