মোঃ জাহাঙ্গীর আলম:
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ঠাকুর কান্দি গ্রামে যৌতুকের দাবিতে বন্যা আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূ কে স্বামী জাহিদ ও স্বামীর পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টাও করা হয়।
বন্যার বাবার বাড়ি ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের নারচী গ্রামে। তার পিতা সায়েদুর রহমান একজন কৃষক। ৫ বছর আগে ঠাকুর কান্দি গ্রামের রজমানের ছেলে মো. জাহিদের সঙ্গে বন্যার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মোহরানা বাবদ ১লাখ ৮০ টাকা পরিশোধ , ফার্নিচারসহ আনুমানিক ৫ লাখ টাকা মূল্যের উপহার সামগ্রী জামাইকে দেওয়া হয়।
তবে বিয়ের পর থেকেই জাহিদ ও তার পরিবার অতিরিক্ত যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। দাবি করা হয় আরও ৫০ হাজার টাকা ও ৪ আনা স্বর্ণালংকার। মেয়ের বাবার পক্ষে এই দাবি পূরণ করা সম্ভব না হওয়ায় বন্যার ওপর চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
গত ২৪ আগস্ট রাত ৯টার দিকে স্বামী জাহিদ, তার মা জবেদা, ফুফু শাশুড়ি আছমা বেগম ও বেদনা বেগম অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজন স্ত্রী বন্যাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তাকে গায়ের ওড়না খুলে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। বন্যার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। বন্যা দায়ের করা অভিযোগ বিবাদীরা অস্বীকার আসছে।
বন্যার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেলেও বিবাদীরা হাসপাতালে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বন্যাকে ‘হাসপাতালে নেওয়ার’ কথা বলে জাহিদ তার বাবার বাড়ি নারচী গ্রামে রেখে আসে।
স্ত্রী বন্যা বলেন, বিয়ের ৫ বছরের হয়ে যাওয়ার পর ৬ মাস পর থেকে যৌতুকের দাবিতে মারধর করেন। এরকম মারধরের শিকার হয়ে গত এক মাস আগেও মারধর করেন ও ২৪ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময় স্বামী, শাশুড়ী, ফুফু শাশুড়ী অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচজন মিলে সিলিং ফ্যানের উপর গায়ে ওরনা খুলে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আমার আত্মচিৎকার আশেপাশে মানুষ এগিয়ে আসলে এবং হাসপাতালে নেওয়ার কথা হলে বিবাদীরা নিতে দেয়নি। পরে আমার স্বামী হাসপাতালের কথা বলে বাপের বাড়ি দিয়ে যায়। আমাকে স্বামী রাখবে না তালাক দিতে চায় তবে আমি এই বিবাদীদের বিচার চাই।
বন্যার মা রুপালী বেগম বলেন, আমার মেয়ে ওরণা পেছিয়ে মারতে চেয়েছিল আমি এর সঠিক বিচার চাই।
বন্যার মামা রিপন বলেন, মাঝখাঝে আমার ভাগনি কে অত্যাচার করলে ১ মাস আগে এগিয়ে গেলে আমাদের নামে নামে মিথ্যা থানায় অভিযোগ করেন। বর্তমানে জানতে পারলাম আমার ভাগনিকে গায়ের ওরনা পেছিয়ে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো। আমি বিবাদীদের বিচার চাই।
বর্তমানে বন্যা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় আছেন। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয় হয়েছে ।
১নং অভিযুক্ত বন্যার স্বামী জাহিদ কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জাহিদ মা এ বিষয় কথা না জাহিদের বাবা ২৪ আগস্ট অভিযোগের কথা বলেলে, এক মাস আগের কথা বলেন। এবিষয়ে বন্যার ফুফু শাশুড়ী বেদনা বলেন, ২৪ আগস্ট ২৪ তারিখের ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত মোহাম্মদ কোহিনুর মিয়া বলেন, বিষয়টি কেউ যদি অভিযোগ দেয় দেখা হবে।