আবদুল আজিজ:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের গারাংগিয়া এলাকায় অবস্থিত গারাংগিয়া রব্বানী মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জনৈক এটিএম রশিদ উদ্দিন শাহিন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি ঘটে গত ৩১ আগস্ট (রবিবার) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শী ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রশিদ উদ্দিন শাহিন কিছু বহিরাগত যুবক ও বখাটে নিয়ে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে অধ্যক্ষ নুরুল আলম ফারুকীর কক্ষে ঢুকে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অধ্যক্ষ ফারুকী ক্লাস পরিদর্শনে চলে যান। পরবর্তীতে ক্লাস কার্যক্রম শেষে ফিরে এসে তিনি দেখতে পান তার অফিস কক্ষে তালা লাগানো। ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।
অধ্যক্ষ ফারুকী জানান, “গারাংগিয়া রব্বানী মহিলা মাদ্রাসা একটি সার্বজনীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হলেন চট্টগ্রামের এডিসি (শিক্ষা)। এ ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি ইতিমধ্যেই এডিসি (শিক্ষা) এবং সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাই এখন আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদ্রাসা কমিটির সদস্য হতে না পারায় ক্ষোভ থেকে রশিদ উদ্দিন শাহিন পূর্বেও একাধিকবার অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে মাদ্রাসার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। তার ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে গত এক বছরে মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য জানতে রশিদ উদ্দিন শাহিনকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে “পরে কথা বলবেন” বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এদিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তদন্তে সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহি উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গারাংগিয়া ইসলামিয়া রব্বানী মহিলা মাদ্রাসা দীর্ঘদিন ধরে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। এই ধরনের ঘটনা প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।