স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার চকিয়াচাপুর গ্রামে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের, কেউ কেউ নিরাপত্তাহীনতায় গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
প্রেম থেকে পালানো, মামলা ও গ্রেপ্তার
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চকিয়াচাপুর গ্রামের আইজল মিয়ার ছেলে মোবারক হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের এক স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গত ১৯ জুন রাতে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর ২৩ জুন ওই তরুণীর বাবা মোবারক হোসেনকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণের অভিযোগে ধর্মপাশা থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রায় দুই মাস পর গত ২৫ আগস্ট (সোমবার) পুলিশ উপজেলা সদরের বিজয় চত্বর থেকে প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত মোবারককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং তরুণীকে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য পাঠান। পরীক্ষার পর ২৭ আগস্ট (বুধবার) আদালত তরুণীকে পরিবারের জিম্মায় দেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে ফের পালানো
তবে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার সময় মেয়েটি বাবার সঙ্গে বাড়ি না গিয়ে ছেলে পক্ষের একজনের হাত ধরে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর মেয়ের পরিবার আবারও বিষয়টিকে অপহরণ হিসেবে প্রচার শুরু করে।
হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে মেয়ের পরিবার মোবারক হোসেনের বাড়ি ও স্বজনদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ছামিরা বেগম বলেন,
“বিকেল পাঁচটার দিকে তারা আমাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়, বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আমাদের মারধর করে এবং গোয়ালে থাকা ৬টি গরু নিয়ে যায়। গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়।”
এ ঘটনায় মোবারক হোসেনের চাচা গত ২৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ধর্মপাশা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার
অভিযুক্ত পরিবারের সদস্য মোসাদ্দেক আকন্দ ও করিমা বেগম দাবি করেন, “এ ধরনের কোনো হামলা বা লুটপাট হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে হয়রানির জন্য থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশের বক্তব্য
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, “মামলা হওয়ার পর এজাহারনামীয় আসামি খোলা ঘোরাফেরা করতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আমরা সেই নির্দেশই দিয়েছি।”