বরুড়ায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক ও তার ছেলেকে মারধর : গ্রেফতার এক

কুমিল্লা প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বরুড়ায় প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম (৫৫) ও তার ছেলে সাইমন ইসলামকে শুক্রবার (২৯ আগস্ট ২০২৫ ইং) মারধর করে ফিশারির জমি দখলসহ ফিশারি থেকে ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকার মাছ ধরে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় শনিবার (৩০ আগস্ট ২০২৫ ইং) প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বরুড়া থানায় উপস্থিত হয়ে (১) মোঃ ফরিদ উদ্দিন, (২) সুমন মিয়া, (৩) আলী হোসেন, সর্বপিতা- আঃ সামাদসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তাৎক্ষণিক বরুড়া থানা পুলিশ ৩ নং আসামি আলী হোসেনকে গ্রেফতার করে এবং অন্যান্য দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

মামলার বাদী প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, মোঃ মফিজুল ইসলামের বাড়ি কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার ৩ নং উত্তর খোশবাস ইউনিয়নের পূর্ব ইলাশপুর গ্রামের (বেছুর বাড়ি) বাসিন্দা। তিনি কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োজিত আছেন।

মোঃ মফিজুল ইসলাম জানান, তিনি গত ১৯ জুন ২০২৩ ইং তারিখে বরুড়া থানাধীন পূর্ব ইলাশপুর মৌজার ১২৪ নং খতিয়ানের হাল দাগে ২৩ শতাংশ ভূমির মধ্যে ০৬ শতাংশ ভূমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক মোখলেছুর রহমানের নিকট হতে উক্ত জমি ক্রয় করার পর থেকে মাছের ফিশারি করে আসছেন।

আসামিগণ দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত ফিশারির জমিটি অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন দুর্বৃত্তসহ আসামিগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলামের মাছের ফিশারি থেকে জাল দিয়ে মাছ ধরতে থাকে। তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম ও তার ছেলে সাইমন ইসলাম ফিশারি থেকে মাছ ধরতে বাধা দিলে আসামিগণ ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড, দা, ছুরি ও লাঠি নিয়ে হামলা করে।

এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম গুরুতর আহত হন এবং তার ছেলে সাইমন ইসলামের হাত ভেঙে যায়। আসামিগণ সাইমন ইসলামের সাথে থাকা ৩৯,০০০ টাকা মূল্যের স্মার্টফোন ও নগদ ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম ও তার ছেলে সাইমন ইসলামের ডাক চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসছে দেখে আসামিগণ প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি-ধমকি দিয়ে ফিশারি থেকে আনুমানিক ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকার মাছ ধরে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল ইসলাম আরো জানান, ৩ নং আসামি আলী হোসেন জেল হাজত থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে আসার পর আসামিপক্ষ প্রকাশ্যে আমাকে ও আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। আসামিদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে আমার পরিবারকে রক্ষা এবং জমি বেদখল রোধে সহযোগিতা করার জন্য বরুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি), কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

এ ব্যাপারে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, ৩ নং আসামিকে গ্রেফতার করে ১৪৩/১৪৭/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *