স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ এড়াতে বিএনপি ও জামায়াত তাদের নিজ নিজ ছাত্র সংগঠনকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে দল দুটির হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগের পর ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরকে এই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতেই উভয় দলের নেতাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা কঠোর হাতে দমন করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, “সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে, ছাত্রদল সংঘর্ষ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। আমরা ছাত্রদলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিষয়টি অবগত করেছি।”
একইভাবে, জামায়াতে ইসলামীর এক নায়েবে আমিরও মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “ছাত্রশিবির বা জামায়াতের বাইরের কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করবে না। তবে নেতাকর্মীদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।”
রাজনৈতিক দল দুটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারও সরাসরি কথা বলেছেন দুই দলের নেতাদের সঙ্গে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। ভোটের আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং কারচুপির অভিযোগ করেন ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাগছাসের সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা।
নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এই কারণে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে অবস্থান নেন। ভোট চলাকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাব এলাকায় অবস্থান নেন, আর জামায়াতের নেতাকর্মীরা শাহবাগ ও নিউমার্কেট এলাকায় উপস্থিত ছিলেন। শাহবাগের একপাশে বিএনপির কিছু নেতাকর্মীও অবস্থান নেন।
সন্ধ্যার পর মহানগর ছাত্রদল বাংলা মোটর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যাত্রা করেন। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে অংশগ্রহণ করেন। জামায়াতও শাহবাগ এলাকায় অবস্থান ধরে রাখে। এতে সম্ভাব্য সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়।
এরপরই সরকারের পক্ষ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উদ্যোগ নেয়। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা হয়। শিক্ষাঙ্গনে শান্তি বজায় রাখা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষা করার জন্য এটি ছিল একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।