আব্দুর রহিম জয়:
বগুড়ায় শতাব্দী ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার ইকবাল হোসেনকে মাত্র ১৫ সেকেন্ডে ১৩ বার হাতুরির আঘাত করে খুন করেছে তার সহকর্মী মো. রাকিবুল ইসলাম রতন (২৫)। হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তার রতন শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে। এ সময় তার কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন ও নগদ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, সেলাই রেঞ্জ ও সিসিটিভি ফুটেজও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মুহাম্মাদ রায়হান।
এর আগে রবিবার গভীর রাতে শহরের রংপুর সড়কের দত্তবাড়ি এলাকায় অবস্থিত ফিলিং স্টেশনের ক্যাশ কাউন্টারের ভেতরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ইকবাল হোসেন সিরাজগঞ্জ সদরের পিপুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।
ঘটনার পটভূমি
জানা যায়, অভিযুক্ত রতন ও নিহত ইকবাল একই ফিলিং স্টেশনে কাজ করতেন। ইকবাল বিভিন্ন সময়ে পাম্প থেকে তেল চুরি করত বলে অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে এ ঘটনা রতন মালিককে জানালে ইকবাল ক্ষিপ্ত হয়ে রতনের ওপর চড়াও হয় এবং মারধর করে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রতন সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘুমন্ত অবস্থায় ইকবালকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে রতন। পরে সে নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রতনের স্বীকারোক্তি
ডিবি পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রতন স্বীকার করেছে যে, তেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ইকবালের অপকর্মের কারণে মালিক ভুল বুঝে রতনকে চড় মারেন। এতে অপমানিত হয়ে সে প্রতিশোধ নিতে হত্যার পরিকল্পনা করে।
মামলা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
এ ঘটনায় নিহত ইকবালের বোন মোছাঃ সাদিয়া খাতুন বাদী হয়ে সোমবার বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মুহাম্মাদ রায়হান জানান, “আসামি রতনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আরও তথ্য উদঘাটনের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।”