সরকারের উদ্যোগ সফল করতে সঞ্চয়ের টাকার সঠিক ব্যবহার জরুরি : সুলতানা জেরিন

মোঃ ইসলাম উদ্দিন তালুকদার  : 

সঞ্চিত টাকা দিয়ে কেউ গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করবেন, কেউ সেলাই মেশিন কিনবেন, জমিজমা ক্রয় করবেন কিংবা ব্যবসা শুরু করবেন। সরকারের দেওয়া এই সঞ্চয়কৃত অর্থকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। আয় বাড়াতে হবে এবং সেই আয়ের উৎস থেকেই পরিবারের খরচ চালাতে হবে। তবেই সরকারের এ উদ্যোগ সফল হবে। বুধবার (সকাল সাড়ে ১১টায়) উপজেলা মিলনায়তনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডির আয়োজনে এলসিএস কর্মীদের সঞ্চয়কৃত অর্থের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা জেরিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার রহমান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আদিত্য পাল, উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস প্রমুখ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অনুন্নয়ন বাজেটভুক্ত “গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ কর্মসূচি”র অধীনে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ৩ জন সুপারভাইজার এবং ৪০ জন এলসিএস কর্মীকে এ সঞ্চয়ের অর্থ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রত্যেক সুপারভাইজারকে ৫৪ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক কর্মীকে ৪৩ হাজার টাকা করে মোট ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯শ টাকা প্রদান করা হয়।
প্রকল্পের চুক্তি শুরু হয় ২০২৪ সালের ১ জুলাই এবং শেষ হবে ২০২৫ সালের ৩০ জুন। এ প্রকল্পে একজন সুপারভাইজার দৈনিক ৩৭৫ টাকা মজুরি পান, যার মধ্যে প্রতিদিন ৪০% হারে ১৫০ টাকা সঞ্চয় এবং ৬০% হারে ২২৫ টাকা প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, কর্মীদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা, যার মধ্যে ৪০% হারে ১২০ টাকা সঞ্চয় এবং ৬০% হারে ১৮০ টাকা প্রদান করা হয়। প্রকল্পের অর্থায়নে সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা জিসি–লাখাইপুরবইউপিসি ভায়া হাসাউড়া সড়ক, সুরমা ইউপিসি–ডলুরা বালাট বর্ডার হাট সড়ক, সুনামগঞ্জ–মঙ্গলকাটা সড়ক, সুনামগঞ্জ–বীটগঞ্জ সড়ক এবং বীটগঞ্জ–রামপুর ভায়া খাগুরা সড়ক মেরামত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা জেরিন আরও বলেন, “সরকার গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং গ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একদিকে গ্রামীণ সড়কগুলো উন্নত হচ্ছে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। আমি আশা করি, আপনারা এই সঞ্চিত অর্থকে সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করবেন, যাতে আপনার পরিবার স্বাবলম্বী হয় এবং এলাকার অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়।”
তিনি এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে আপনাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। আপনারা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করলে আমাদের সুনামগঞ্জ উপজেলা একটি আদর্শ উপজেলা হিসেবে গড়ে উঠবে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে উপজেলা প্রশাসকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন, শিক্ষা খাতের মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা সহজীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিভিন্ন সময় ত্রাণ বিতরণ, কৃষি সহায়তা এবং নারীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *