মোঃ সোহেল সীমান্ত:
কক্সবাজার, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার প্রতিরোধের লক্ষ্য নিয়ে একটি বিশেষ আভিযানিক দল গঠন করে গত কয়েক মাস ধরে নাফ নদী এবং তৎসংলগ্ন সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেয় বিজিবি। এ পর্যায়ে, অপহরণ এবং মানব পাচার প্রতিরোধে ২ বিজিবি বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করলে, আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য এবং ব্যাটালিয়নের নিজস্ব গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে, বেশ কিছু দিন যাবত কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় মায়ানমার হতে বাংলাদেশে মানব ও মাদক পাচার এবং বাংলাদেশ হতে মায়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া পর্যন্ত মানব পাচারের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত। যার পরিপ্রেক্ষিতে, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন গত ১০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অধিনায়কের নেতৃত্বে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন একটি বিশেষ অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করেছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলা এই অভিযানে একটি সংগঠিত পাচারকারী দলের পাঁচ সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা সম্ভব হয়।
আটককৃতরা হলেন: সৈয়দ আলম (২৯), মোঃ আব্দুল্লাহ (২২), মোঃ রিদুয়ান হোসেন (২০), মোঃ নুরুল আফসার (২০) এবং মোঃ আঃ হাকিম (৪০)। সকলের ঠিকানা: গ্রাম-দক্ষিণ লম্বরি, পোস্ট-মিঠাপানিরছরা, ৩ নং ওয়ার্ড, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার। সাইফুল, মোস্তাফা প্রকাশ গোরাইয়া, নুর আলম, সামসুকে পলাতক আসামি করে, গ্রেপ্তারকৃত ০৫ জন আসামিকে প্রচলিত আইন অনুসারে স্থানীয় থানায় মামলা রুজুসহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাচারের সাথে জড়িত কয়েকটি চক্রের কাঠামো, সদস্য এবং কার্যক্রমের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলে ২ বিজিবি টেকনাফের আশেপাশে বেশ কিছু এলাকায় দিনভর সাঁড়াশি অভিযান করলেও চক্রের অন্য কোনো সদস্যকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান বিজিবি।
চলতি বছরের অদ্যাবধি পরিচালিত বিশেষ অভিযানগুলোতে সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রগুলোর সর্বমোট ৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে এবং ২১ জন আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তবে, চক্রের মূল হোতা এবং বাকি সদস্যদের ধরতে আরও অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি।
পাচারকারী চক্রের পলাতক সদস্যদের সকলকে আটক করা হলে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য কমে যাবে বলে জানায় এলাকাবাসী।