কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসন: আলোচিত এমপি পদপ্রার্থী যুবনেতা ইমরান মজুমদার

সাগর চৌধুরী ভোলা: 

ছাত্ররাজনীতি থেকে জাতীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত, ইমরান মজুমদারের অতুলনীয় নেতৃত্ব।
বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে নতুন নেতৃত্বের উত্থান সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে উঠে আসা, আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে লড়াই করে গড়া নেতৃত্ব জনগণের কাছে ভিন্ন মর্যাদা পায়। কুমিল্লা জেলার রাজনীতিতে এমনই এক আলোচিত নাম এখন যুবনেতা ইমরান মজুমদার। দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্ররাজনীতি, আইনজীবী, রাজনীতি এবং যুবদলের অঙ্গরাজনীতিতে তিনি সক্রিয় থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সাহসী, কর্মীবান্ধব এবং ত্যাগী নেতারূপে।

বর্তমানে তিনি আলোচনায় এসেছেন কুমিল্লা-১০ (ক) নাঙ্গলকোট উপজেলা, (খ) লালমাই উপজেলা সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য বিএনপি প্রার্থী হিসেবে। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, কর্মীবান্ধব ভূমিকা এবং আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় উপস্থিতি তার বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে তাকে এ আসনে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরছে।

রাজনীতি ছাত্রদল থেকে শুরু

রাজনীতিতে ইমরান মজুমদারের যাত্রা শুরু হয় ছাত্রজীবনে। তিনি প্রথমে তার ইউনিয়ন ছাত্রদল ও দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে মাঠে নামেন। তখন থেকেই তিনি সাংগঠনিক দক্ষতা, আন্তরিকতা এবং কর্মীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের কারণে আলোচনায় আসেন।

শিক্ষাজীবনেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, রাজনীতি মানে কেবল স্লোগান দেওয়া বা মিছিল করা নয়—রাজনীতি মানে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং কর্মীদের সঙ্গে একাত্ম হওয়া।

ধারাবাহিক পদোন্নতি ও সাংগঠনিক দক্ষতা

ইমরান মজুমদারের রাজনৈতিক জীবনকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি ধাপে ধাপে একেকটি স্তর অতিক্রম করে আজকের জায়গায় এসেছেন।

  • ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

  • বৃহত্তর সদর (দক্ষিণ) উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

  • জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আইনজীবী ও আইন-শিক্ষার্থীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

  • ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

  • ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তার সাংগঠনিক দক্ষতার স্বীকৃতি পান।

এভাবে ছাত্ররাজনীতি থেকে যুবদল পর্যন্ত তার পদোন্নতির ধারা প্রমাণ করে, তিনি কেবল “নেতাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পদ” নয়, বরং নিজের যোগ্যতা, শ্রম এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমেই প্রতিটি অবস্থান অর্জন করেছেন।

আন্দোলন-সংগ্রামের মঞ্চে সাহসী পরিশ্রমিক নেতা

২০১১ সাল থেকে টানা বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে ঢাকা এবং কুমিল্লার মাঠে থেকেছেন ইমরান মজুমদার।

  • বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় সব কর্মসূচিতেই তিনি সরাসরি উপস্থিত ছিলেন।

  • সরকারের রাজনৈতিক দমন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বারবার।

  • একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন এবং কারাভোগ করেছেন।

  • তার বিরুদ্ধে মোট নয়টি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সকল বাধা উপেক্ষা করে তিনি রাজনীতির মঞ্চ থেকে সরে যাননি। বরং তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে থেকে লড়াই চালিয়ে গেছেন।

কর্মীরা বলেন, “তিনি শুধু নির্দেশ দেন না, মাঠে থেকেও নেতৃত্ব দেন।”
সিনিয়র নেতারা বলেন, “জেল-জুলুম সহ্য করার পরও তিনি দমে যাননি, বরং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছেন।”
তৃণমূল ছাত্রনেতারা তাকে “ত্যাগী ও পরীক্ষিত” নেতা হিসেবে আখ্যা দেন।

সাংগঠনিক অবদান ও উদ্ভাবনী ভূমিকা

ইমরান মজুমদার দপ্তর সম্পাদক থাকাকালে সংগঠনকে আধুনিকায়নের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন—

  • কর্মসূচি বাস্তবায়নের তথ্য সংরক্ষণে ডাটাবেস সিস্টেম চালু করা।

  • গ্রেফতার নেতাকর্মীদের জন্য আইনি সহায়তা সমন্বয় টিম গঠন।

  • আহত বা নির্যাতিত কর্মীদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা তহবিল গঠন।

  • স্থানীয় পর্যায়ে কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে রুটভিত্তিক সাংগঠনিক টিম তৈরি।

এইসব উদ্যোগ তাকে কর্মীবান্ধব এবং সৃজনশীল নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

কুমিল্লা-১০ আসন ও রাজনৈতিক গুরুত্ব

কুমিল্লা-১০ (লালমাই ও নাঙ্গলকোট) দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিএনপির শক্তিশালী ভোটব্যাংক রয়েছে। তবে প্রার্থী নির্ধারণে সবসময়ই ত্যাগী, জনপ্রিয় এবং আন্দোলন-সংগ্রামে পরীক্ষিত নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন—

  • ইমরান মজুমদারের দীর্ঘ সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা

  • আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা

  • বারবার জেল-জুলুমের শিকার হওয়া

  • তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক

তাকে এ আসনে একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।

সহকর্মীদের চোখে ইমরান মজুমদার

একজন সিনিয়র যুবদল নেতা বলেন—
“আমরা অনেক দপ্তর সম্পাদক দেখেছি। কিন্তু ইমরান ভাই অন্যরকম। তিনি শুধু অফিসে বসে নির্দেশ দেননি, মাঠে থেকেও লড়েছেন।”

একজন সাবেক ছাত্রদল নেতা বলেন—
“ছাত্ররাজনীতিতে তার সুনাম এতটাই দৃঢ় যে, যেকোনো কর্মসূচিতে তিনি থাকলে কর্মীরা দ্বিগুণ উৎসাহ পায়।”

রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও পরিকল্পনা

ইমরান মজুমদার বিশ্বাস করেন, আগামী দিনে বিএনপিকে তরুণ নেতৃত্বকে সামনে আনতেই হবে। তিনি নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন—

  1. ডিজিটাল সংগঠন গঠন: সব তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণ ও কর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত থাকা।

  2. রাজনৈতিক শিক্ষা কর্মশালা: নতুন প্রজন্মকে সংগঠিত করতে প্রশিক্ষণ ও সেমিনার আয়োজন।

  3. জনসম্পৃক্ত রাজনীতি: রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ত্রাণ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখা।

  4. তৃণমূলকে শক্তিশালী করা: ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সক্রিয় কমিটি গঠন।

  5. তরুণ নেতৃত্বকে সুযোগ দেওয়া: নতুন প্রজন্মকে সামনে আনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা।

ইমরান মজুমদার আজ কুমিল্লা তথা জাতীয় রাজনীতিতে আলোচিত নাম। ছাত্রদল থেকে শুরু করে যুবদল পর্যন্ত তার দীর্ঘ পথচলা প্রমাণ করে, তিনি একজন ত্যাগী, পরীক্ষিত ও সাহসী নেতা। জেল-জুলুম, মামলা-মোকদ্দমা সত্ত্বেও তিনি হার মানেননি।

কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তার নাম আলোচনায় আসা অমূলক নয়। বরং তার অভিজ্ঞতা, কর্মীবান্ধব ভাবমূর্তি এবং আন্দোলনে নেতৃত্বই প্রমাণ করে—তিনি কেবল একজন প্রার্থী নন, বরং ভবিষ্যতের জাতীয় নেতৃত্বের জন্য এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *