লুটপাট ও দুর্নীতির রাজা ঘাটাইল উপজেলা পিআইও এনামুল হক, খালের মাটি ইটভাটায় বিক্রি

মোঃ নাবিন আহমেদ: 

পালিয়ে যাওয়া হাসিনা সরকারের সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নের নামে করেছেন লুটপাট। পালিয়ে যাওয়া হাসিনা সরকার যেহেতু অবৈধ সরকার ছিল তাই সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী যার যা ইচ্ছা তাই করতো। হাসিনার একটি কথাই ছিল যে তোমরা যে যাই করো করতে পারো কোনো প্রকার বিচার হবে না।

তোমরা শুধু আমাকে ড়্গমতায় রেখো। আমি শুধুই চাই পাওয়ার। যার কারনে জেলা ডিসি, এসপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড ও পিআই কর্মকর্তা  মেতে উঠেছিল দুর্নীতিতে। প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই তুলে নিত টাকা। টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলায় দেদারছে চলছে কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা। যার কারনে বিলীন হতে চলছে কৃষি জমি।

ঘাটাইল উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হক একটু ভিন্ন পথে মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। ঘাটাইল উপজেলা আনেহলা ইউনিয়নের মাকেশ্বর এলাকার চ্যংটা খাল ও দেউলা বাড়ি ইউনিয়নের পানজানা গ্রামের চিটার খাল খনন করে খালের মাটি খালের দুই পারে না তুলে রাতের আধারে ট্রাকে করে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছেন।

পিআইও এনামুল হক দীর্ঘদিন যাবদ টাঙ্গাইল জেলায় কর্মরত থাকার কারনে টাঙ্গাইল জেলার সকল অপকর্ম তার জানা। বিগত দিনে আওয়ামীলীগের নেতা বলে পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেরালেও বর্তমানে ভোল পাল্টিয়ে বিএনপি নেতা বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন এই দুর্নীতিবাজ পিআইও এনামুল হক।   অথচ তার বাড়ি নওগাঁ জেলায়! কিন্তু সে পরিচয় দেন বগুড়া জেলায় তার বাড়ি।

২০১৯ সাল থেকে তার বিরম্নদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরেও তার ধারে কাছে যেতে পারেননি কেউ। কারন তার সাথে ছিল আওয়ামীলীগের দোসররা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে  তার মধ্যে অনত্যম হলো,  টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে কাবিখা প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এনামুল হকের বিরুদ্ধে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগসাজশে প্রকল্পের কাজ না করে এ লুটপাট করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির নামে ফী বছরের শেষ পর্যায়ে বরাদ্দের ২৩৯.৮৫৩ মে. টন খাদ্যশস্য বিভিন্ন প্রকল্পের নামে কাজ দেখিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে (শেষ পর্যায়) গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্যের মোট বরাদ্দ ছিল ২৩৯.৮৫৩ মে. টন। এর মধ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির সাধারণ বরাদ্দ ৯২.৪৬৭ মে. টন। আর নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক বরাদ্দ ছিল ১৪৭.৩৮৬ মে. টন খাদ্যশস্য। এর মধ্যে ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৮টি প্রকল্পের নামে প্রাক্কলন ব্যয় দেখানো হয় ১২৭.০০ মে. টন। বাকি ১১২.৮৫৩ মে. টনের কোনো প্রকল্পই দেখাতে পারেননি পিআইও এনামুল হক।

বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কাগজে কলমে প্রকল্প থাকলেও সরেজমিনে ওইসব প্রকল্পে কোনো কাজ হয়নি। এলাকাবাসী জানান, কর্মসৃজন প্রকল্পগুলোতে বেশি লুটপাট হয়। এ প্রকল্পে শ্রমিক না খাটিয়েই মেম্বার চেয়ারম্যানরা টাকা উত্তোলন করে থাকেন। কাবিটা, কর্মসৃজন, টিআর প্রভৃতি প্রকল্পে মাঝে মধ্যে কিছু কাজ করতে দেখা যায় বলে তারা জানান।

উপজেলার ২নং ঘাটাইল ইউনিয়নের ‘নিয়ামতপুর বাবর খার বাড়ি থেকে আজগরখার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণ’ প্রকল্পে প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ৮ মে. টন। সাবেক এক ইউপি মেম্বার জানান, এ রাস্তায় কাবিখার কোনো কাজই হয়নি। ৪০ দিন কর্মসূচির শ্রমিকরা কিছু কাজ করেছে। এ ইউনিয়নে প্রকল্পের নামে অনেক বরাদ্দ আসে। কিন্তু প্রকল্পগুলো কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে।

‘শংকরপুর মোড় থেকে নড়জনা রাস্তা পর্যন্ত পুনঃনির্মাণ প্রকল্প’ নামে প্রাক্কলন দেখানো হয় ৮ মে. টন খাদ্যশস্য। এলাকাবাসী জানান, এ প্রকল্পে তেমন কাজ হয়নি। একইভাবে সাগরদীঘি ইউনিয়নের ‘তমালতলা থেকে রাধানগর হয়ে সৈয়দপুর সীমানা পর্যন্ত পুনঃনির্মাণ’ নামে প্রাক্কলিত ৮ মে. টন প্রকল্পেও কোনো কাজ হয়নি বলে স্থানীয় জাহাঙ্গীর হোসেন জানান।

মানুষ অনেক আশা করেছিল যে বর্তমানে দুর্নীতি মুক্ত হবে দেশ কিন্তু সে আশা  কোনো দিনই পুরোন হবে না। কারন বর্তমানে আরও বেশি লুটপাটে খেলায় মেতে উঠছে প্রসাশনের কর্মকর্তা কর্মচারী এমনকি নামধারী বিএনপি নেতা কর্মী। এ বিষয় গতকাল মঙ্গলবার টাঙ্গাইল পৌর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিনের সাথে কথা বললে জানা যায়, যে একসময় যারা বিএনপির নাম নিত না তারাই এখন বিএনপির বড় বড় নেতা তারাই এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিএনপির নাম বদনাম করছে।

এ বিষয় ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমি বিষয়টি দেখবো। এ বিষয়  পিআইও এনামুল হক বলেন, আমি খাল উদ্ভোবন করেছি এরপর কি হচ্ছে তা আমি জানি না। তবে কোনো অন্যায় অনিয়ম হলে আমি দেখবো। আর এ বিষয় গুলো দেখাশুনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রসাশক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *