স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
পতিত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে দীর্ঘ ১৬ বছরে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এই পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতোমধ্যে সরকারের উদ্যোগে বিদেশে অবস্থিত বেশ কিছু অবৈধ সম্পদ চিহ্নিত ও জব্দ করা হয়েছে। এখন সেগুলো দেশে ফেরত আনার বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (স্থানীয় সময়) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, “বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের কাজ অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও জটিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রক্রিয়ায় গতি আনতে উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ।”
প্রেস সচিব জানান, পাচার হওয়া সম্পদ চিহ্নিত ও ফেরত আনার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সি (NCA)-র সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে পাচারের অর্থ কোথা থেকে, কীভাবে পাচার হলো, কারা এতে জড়িত এবং কী উপায়ে তা জব্দ ও ফেরত আনা সম্ভব—সে বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়। প্রেস সচিব বলেন, “NCA ইতোমধ্যে দুটি বিষয়ে উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। অন্য দেশগুলো কীভাবে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার করেছে, সেই অভিজ্ঞতাও আমরা যাচাই করছি। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের অনুসন্ধান কার্যক্রম, যাতে বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
প্রেস সচিব আরও জানান, যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাথন পাওয়েলের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস বৈঠক করেছেন। সেখানে অর্থপাচার ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট, জাতীয় ঐকমত্য গঠন, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা—এসব বিষয় নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগকে দেশের জনগণের সম্পদ রক্ষা এবং দুর্নীতির জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার পথে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।