স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে ২৩০ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছেন যুক্তরাজ্যের এক ধনকুবেরের স্ত্রী। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল বিবাহবিচ্ছেদ। টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, বিচ্ছেদের আগে স্ত্রীকে ‘টেসকোতে ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতে হবে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী।
বিচারিক রায়ে বলা হয়, স্বামীর লাগাতার মানসিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি স্ত্রীর স্বাধীন ইচ্ছাকে দমন করেছিল। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দুজনের মধ্যে একটি বিবাহোত্তর চুক্তি হয়। তবে ওই চুক্তির মাধ্যমে স্বামী তার স্ত্রীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন এবং বলেন, শর্ত না মানলে স্ত্রী ও তার পরিবারকে দেউলিয়া করে দেবেন।
বিচারক কব বলেন, ‘এই ধনকুবের ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রীকে আইনগত সহায়তা থেকে বঞ্চিত করতে তার আইনজীবীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্টের চেষ্টা করেছিলেন।’
ডিভোর্সের পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই নারী। আদালতের মতে, এই দম্পতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে এক সময় প্রায় দেড় বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদের মালিক হন।
ওই নারীর ভাষ্য, ‘আমার পরিবার ছিল খুবই গরিব। আমরা উঠে এসেছি একেবারে শূন্য থেকে।’
২০১২ সালে স্বামী একটি প্রযুক্তি কোম্পানি গড়ে তোলেন, যার সাফল্য তাদের সম্পদের ভিত্তি তৈরি করে। পরে নিরাপত্তা ও সন্তানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন তারা।
তাদের বিয়ের আইনগত ভিত্তি ছিল ‘কান্ট্রি এ’ নামে এক দেশের আইন অনুযায়ী, যার আওতায় বৈবাহিক জীবনের অর্জিত সম্পদ উভয়ের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হবে।
২০২২ সালের গ্রীষ্মে তারা আলাদা হন এবং ২ সেপ্টেম্বর ডিভোর্সের আবেদন করেন। বিচ্ছেদ নিষ্পত্তির সময় তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ধরা হয় আনুমানিক ৫৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যার ৪২ শতাংশ পান স্ত্রী।
রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে ওই নারীর আইনজীবী ক্লেয়ার গর্ডন বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ কতটা প্রভাব ফেলে তা আদালত এই রায়ে স্বীকার করেছে।’
তাদের তিন সন্তান বর্তমানে বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করছে।