স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
হাওর অঞ্চলের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সরকার মাস্টার প্ল্যানের আলোকে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘হাওরের সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
হাওরে স্থায়ী সমাধানের পথে সরকার
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে এবং তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। হাওরে টেকসই বাঁধ নির্মাণ, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো, পর্যটন নিয়ন্ত্রণ এবং জলজ সম্পদের সুরক্ষাসহ কয়েকটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “হাওর উন্নয়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় উপকারভোগীদের অন্তর্ভুক্ত না করলে কোনো উদ্যোগই টেকসই হবে না।”
টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থা উদ্বেগজনক
সভায় বিশেষভাবে টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিস্থিতি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “টাঙ্গুয়ার হাওর বর্তমানে পরিবেশগত সংকটে রয়েছে। এটি এখন বিপন্ন হাওরের তালিকায় উঠে এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, যেগুলো হাওর সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৩ সালে প্রণীত ‘পানি আইন’-এর অধীনে এবারই প্রথম কার্যকরভাবে হাওর উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগে মৎস্য অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর ও হাওর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে কাজ করছে।”
চার স্তরের সমন্বয়ে হাওর উন্নয়ন
রিজওয়ানা হাসান জানান, “হাওর উন্নয়নে একটি সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। পরিবেশ, পানি, মৎস্য এবং হাওর কর্তৃপক্ষ—এই চারটি স্তরের সমন্বয়ে আমরা হাওরের সংকট মোকাবিলা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই।”
তিনি হাওর অঞ্চলে অবাধ পর্যটন, অপ্রয়োজনীয় বাঁধ ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় অন্যান্যরা যা বললেন
সভায় হাওর রক্ষা এবং এর সম্ভাবনার বিষয়ে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশবিদ, স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠনের নেতারা। সবাই একমত হন যে, হাওর শুধু জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল নয়, এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ অংশও বটে।