স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কিন্তু সরকার কেন ব্যর্থ হচ্ছে? এটি এখন একটি বড় প্রশ্ন।” তিনি আরও দাবি করেন, বর্তমান সরকার জনগণের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে শুধুমাত্র আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিচ্ছে।
আজ শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে জুলাই অভুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এ কথা বলেন। তিনি এই সভায় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং প্রশ্ন তোলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে এবং যাকে সরাসরি হত্যার ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না?” তারেক রহমান আরও বলেন, “তাহলে কি আমরা ধরে নেবো, যারা বিভিন্নভাবে মব সৃষ্টি করছে এবং একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে, সেখানে সরকারের বা প্রশাসনের কোনো প্রশ্রয় রয়েছে?”
গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে:
তারেক রহমান বলেন, “গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শেষ হয়ে যায়নি। ৮-৯ মাস আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শত্রু রয়েছে, যারা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।” তিনি উল্লেখ করেন, “এরা মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল এবং আজও সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।” তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, “আমি বারবার বলেছি, অন্যায়কারী যেই হোক, আমরা প্রশ্রয় দেবো না। যে অন্যায় করবে, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জুলাই অভুত্থানে শহীদের বিচার বিলম্বিত হওয়া:
তিনি আরও বলেন, “যুলাই অভুত্থানে শহীদদের বিচার কেন বিলম্বিত হচ্ছে? কেন মব সৃষ্টি করা হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হবে।” তারেক রহমান বলেন, “এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যেখানে অযথা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, অথচ শহীদের পরিবার এখনও বিচার না পেয়ে ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করছে।”
খুলনায় যুবদলের নেতার হত্যাকাণ্ড:
তারেক রহমান খুলনায় যুবদলের বহিষ্কৃত নেতাকে হত্যা করার ঘটনায়ও কথা বলেন। তিনি বলেন, “খুলনায় যুবদল কর্মীকে খুন করা হয়েছে, কিন্তু কেন তা নিয়ে কোনও কথা বলা হচ্ছে না?” তিনি আরও বলেন, “যদি এই হত্যার বিচারের দাবি করা হয়, তবে কেন বলা হচ্ছে যে বিএনপি লাশ নিয়ে মিছিল করছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।”
বাংলাদেশের অস্তিত্ব এবং স্বাধীনতার প্রশ্ন:
তারেক রহমান বাংলাদেশের ইতিহাস ও দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের বিষয়েও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলেছে এবং যারা এর বিরোধিতা করেছে, তাদেরকে বিবেচনায় নিতে হবে।” তারেক রহমান দাবি করেন, “এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত, আর এটি ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
দলীয় ও রাজনৈতিক অবস্থান:
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি কখনো অন্যায়ের পক্ষ নেবে না এবং যারা অন্যায় করবে, তাদের বিরুদ্ধে সঠিক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।” তিনি আবারও দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে এবং আমাদের সব কাজের লক্ষ্য হবে মানুষের অধিকার রক্ষা করা।”
সংগ্রামী অবস্থান:
তিনি আরও জানান, “বিএনপি জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত এবং এই সংগ্রাম কখনো থামবে না।”