আশাশুনিতে এলসিএস প্রকল্পে মহিলা কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন

আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা:

আশাশুনিতে এলসিএস (LCS) প্রকল্পের আওতায় রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে মহিলা কর্মী নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (তারিখ উল্লেখ করুন) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের সামনে সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচির আয়োজন করেন নিয়োগে বঞ্চিত স্থানীয় মহিলা শ্রমিকরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বড়দল ইউনিয়নের ময়না খাতুন, আশাশুনির ডলি খাতুন, কোদন্ডা গ্রামের প্রতিবন্ধী (বোবা) আছিরনের পক্ষে তার বোন আলেয়া খাতুন, এবং বাদপড়া সুপারভাইজার সাহেব আলী। বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্য কুমার দেব সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে, এলসিএস প্রকল্পে মহিলা নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন।

তাদের দাবি, সিও সাধন ঘোষের মাধ্যমে প্রতি নিয়োগে ১৫ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করা হয়েছে। যারা ঘুষ দিতে পারেননি, তাদের বাদ দিয়ে নিয়মভঙ্গ করে অযোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সসীমার মধ্যে মহিলা কর্মী নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও নিয়ম অমান্য করে ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, যারা পূর্বে ১০-১৫ বছর ধরে এলসিএস প্রকল্পে কাজ করেছেন, তাদের অনেককে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আবার আরইআরএমপি প্রকল্পে কাজ করা কিছু ব্যক্তিকে পুনরায় নিয়োগ দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার নাসিমুল হক স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে ডলি খাতুনকে নিয়োগ দিলেও এবার তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

সাহেব আলী বলেন, “সাধন ঘোষের নানা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে মহিলাদের জন্য বরাদ্দকৃত ৫টি কম্বল আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, ইউএনও, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় নেতাদের সুপারিশ থাকার পরও অনেককে লটারি ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বুধহাটা, নওয়াপাড়া, শ্বেতপুর ও বেউলা গাজীরমাঠ এলাকার কাউকে লটারিতে অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে।

মানববন্ধন শেষে বঞ্চিত মহিলারা বিভিন্ন স্লোগানসহ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিও সাধন ঘোষকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্য দেব সরকার মোবাইল রিসিভ না করে ম্যাসেজে জানান তিনি মিটিংয়ে রয়েছেন, পরে কথা বলবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বলেন, “আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *