আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আশাশুনি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা কামরুন নাহারের দায়ের করা প্রতারণা, মালামাল আত্মসাৎ এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মামলার তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। পিবিআই সাতক্ষীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কামরুন নাহার ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন এবং এই সময়ে বিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে অবস্থান করতেন। তিনি অভিযোগ করেন, দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ঢালী মোঃ সামছুল আলমসহ কয়েকজন মিলে তাঁর প্রায় সাত লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত মালামাল আটকে রেখে আত্মসাৎ করেন।
মামলার তদন্তকালে বাদী জানান, তাঁর আসবাবপত্র, মূল্যবান কাগজপত্র, ফ্রিজ, টিভি, প্রাইজবন্ড, কাপড়চোপড় ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় সাত লক্ষ টাকার মালামাল ফেরত চাইলে আসামিরা তাকে গালিগালাজ করে, গলা ধাক্কা দিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের করে দেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করে। মামলায় উল্লেখ রয়েছে, ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনা ঘটে।
এ নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর: ৩০৬) করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ছবি উত্তোলন, মানচিত্র অঙ্কন ও পাঁচজন সাক্ষীর জবানবন্দির ভিত্তিতে দণ্ডবিধির ৪০৩, ৪২০ ও ৫০৬ ধারায় (আত্মসাৎ, প্রতারণা ও হুমকি প্রদর্শন) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, মালামাল জব্দের চেষ্টা করা হলেও বাদী উপযুক্ত আলামত উপস্থাপন করতে না পারায় তা সম্ভব হয়নি। তবে বিবাদীপক্ষের আচরণ, সাক্ষ্য ও ঘটনার প্রেক্ষাপটে মামলাটি আদালতে গৃহীত হওয়ার মতো যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে।
উল্লেখ্য, কামরুন নাহার এর আগে আশাশুনি থানায় ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলার আবেদন করেন। বর্তমান মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে মামলার আসামিরা বাদী এবং সাক্ষীদের মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা হুমকি দিচ্ছে, মামলা তুলে না নিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে। এমনকি সাক্ষীদের কাছ থেকে মিথ্যা এভিডেভিট আদায়ের চেষ্টা এবং ২ নম্বর আসামি মোস্তাফিজুর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সাফাই সাক্ষ্য জোগাড়েরও অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।