স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুরোধে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করায় রাজনৈতিক মহলে ব্যতিক্রমী উদারতার নজির স্থাপন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ বুধবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আমরা চাইলে সমাবেশটি ঘোষিত স্থানেই করতে পারতাম। কিন্তু আমরা কাঁটার পরিবর্তে ফুল দিলাম। আমরা উসকানির জবাবে শান্তির বার্তা দিলাম।”
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, অকারণ উত্তেজনার বদলে উদারতা প্রদর্শন করায় বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতার এক অনন্য নজির স্থাপন হলো। যারা সফল অভ্যুত্থানের পর নিজেদের একমাত্র মালিক ভাবতে শুরু করেছেন, তারা আশা করি এখন নিজেদের অবস্থান নতুনভাবে মূল্যায়ন করবেন। আমরা চাই, তারা হঠকারিতার পথ ছেড়ে একটি সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসুন।”
ছাত্রদল সভাপতির ভাষ্য অনুযায়ী, জুন মাসেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ২২ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। ২৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমতিও মেলে। তবে একই দিনে একই স্থানে এনসিপিও সমাবেশ করতে চায় বলে পরে গণমাধ্যম ও নাগরিক পার্টির নেতাদের মাধ্যমে জানতে পারেন তারা।
রাকিব বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মসূচির স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত খুবই কঠিন ও বিব্রতকর ছিল। শহীদ মিনারকে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ ছিল কর্মদিবসে যেন জনভোগান্তি না হয়। তাছাড়া আমরাই প্রথম অনুমতি নিয়েছিলাম, বৈধ দাবিদারও ছিলাম। তবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হিসেবে, সব মত ও পথের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিই।”
তিনি আরও জানান, নাগরিক পার্টির শীর্ষ নেতারা ব্যক্তিগতভাবে এবং সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে বারবার অনুরোধ জানানোর পরই ছাত্রদল এই উদারতার সিদ্ধান্ত নেয়।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, “আমরা এমন একটি ছাত্ররাজনীতি চাই যেখানে ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু সহাবস্থান ও সৌহার্দ্যও বজায় থাকবে। আমরা সংঘর্ষ নয়, ইতিবাচক গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাস করি।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়া, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রদলের এই সিদ্ধান্তকে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে ইতিবাচক ও গঠনমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মতবিরোধ সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এই বার্তা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেও অনেকে মনে করছেন।