স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর সংগঠনটির কোনো সদস্য বা সংশ্লিষ্ট কেউ আইনভঙ্গ বা অপকর্মে জড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন তারা যদি কোনো অপকর্ম করতে চায়—তবে সেটা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। আইন সবার জন্য সমান। যেই অপরাধ করবে, তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।”
৫ আগস্ট নিয়ে শঙ্কা নেই
সাংবাদিকদের এক প্রশ্ন ছিল—আগামী ৫ আগস্ট ঘিরে কি কোনো জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দিয়েছে? জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আল্লাহ চাইলে কোনো শঙ্কা নেই। দেশবাসী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আপনারা (সাংবাদিকরা) যেভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, তাতে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছি।”
সেনা কর্মকর্তা জড়িত?
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের গোপন কর্মকাণ্ডে একজন সেনা কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাফ জানিয়ে দেন—“যেই হোক, যে বাহিনীর সদস্যই হোক, যদি কেউ নিষিদ্ধ কার্যক্রম বা রাষ্ট্রবিরোধী অপকর্মে জড়িত থাকে, তবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আওয়ামী লীগ এখন গোপনে তাদের তৎপরতা চালাচ্ছে, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টি নজরে রেখেছে। তদন্ত চলছে, প্রমাণ পেলে কেউ রেহাই পাবে না।”
সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা
মোহাম্মদপুর থানায় পরিদর্শন শেষে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা সত্য ঘটনা তুলে ধরুন। কারণ, জনগণ তখনই সচেতন হবে, যখন তারা সত্য জানবে। গণমাধ্যমের সত্য প্রচারই দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখছি—বাংলাদেশের মিডিয়া যতটা নিরপেক্ষ ও তথ্যনির্ভর সংবাদ দিচ্ছে, তাতে বিদেশি মিডিয়াগুলোর মনগড়া, অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচারের প্রবণতা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় আপনাদের এই ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
তদন্ত চলমান
আওয়ামী লীগের গোপন প্রশিক্ষণ এবং সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়ে এক প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “এটা একটি চলমান তদন্তের বিষয়। আমরা যা জানি, তার বাইরেও অনেক তথ্য উঠে আসছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। তবে এটুকু নিশ্চিত করা যায়, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক এবং সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
এই হুঁশিয়ারি ও বার্তার মধ্য দিয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যেসব সংগঠন নিষিদ্ধ, তাদের যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক বা গোপন তৎপরতার ব্যাপারে।