বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের উদ্যোগে ১০ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার:
আউট সোর্সিং শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ ৯ম পে-স্কেল ঘোষণা সহ ১০ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন বিএলএফ চট্টগ্রাম। গত শনিবার সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন (বিএলএফ) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নুরুল আবছার তৌহিদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্রমিকরা এদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। দেশের বর্তমানে সাত কোটি শ্রমিক আছে। যাদের ৮৫ ভাগই অপ্রাষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। ইপিজেড সহ নতুন নতুন শিল্পাঞ্চলে গড়ে উঠেছে শিল্প কারখানা। আইনি বাধা, সরকার ও মালিকদের অসহযোগিতার কারণে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠছে না। ফলে শ্রমিকরা সংখ্যায় বাড়লেও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। বাজার দরের সাথে সঙ্গতি রেখে বাচার মত মজুরি নির্ধারণের কথা উঠলেই সামনে আনা হচ্ছে বিভিন্ন অজুহাত। শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি জাতীয় নিন্মতম বিষয় নিয়ে চলছে দীর্ঘসুত্রীতা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শ্রমিকদের সংগঠন গড়ার ও করার স্বাধীনতাকে নানাভাবে সংকুচিত করে রাখা হচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হয় আমরা সেই পুরনো দাস প্রথায় ফিরে যাচ্ছি। শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ধারাগুলো বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রবর্তন করা, শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কর্মের পরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তা, কর্মক্ষেত্রে নিহত আহতদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ, সকাল সেক্টরের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও জীবিকার স্বার্থে আসন্ন জাতীয় বাজেটে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
শ্রমিকেরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। শ্রমিকদের শ্রম ঘামে ভরে উঠেছে দেশের নতুন নতুন কলকারখানা, শিল্পাঞ্চল, অট্টালিকা সহ অসংখ্য বিলাশবহুল স্থাপনা। দেশের উন্নয়নের অগ্রদূত এই শ্রমিকরাই অধিকার বঞ্চিত ও নির্যাতিত হচ্ছে।
এ সময়ে লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, সরকারিভাবে শ্রমিকদের ভালো-মন্দ দেখভাল করার দায়িত্ব শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অথচ সবচেয়ে কম বাজেট পায় এই দুটি মন্ত্রণালয়। ২০১৫ সালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের সুবিধার্থে দুটি হাসপাতাল করতে গিয়ে সফল হয়নি টাকার অভাবে। এই উদ্যোগে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব প্রক্রিয়ায় কোন উদ্যোগ পাওয়া যায়নি। প্রবাসী শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় সুখ স্বাচ্ছন্দ বিলিয়ে দিয়ে দেশ ও পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটাতে পুড়িয়ে দিচ্ছে নিজেদের রঙিন সময় গুলো। মুখে তাদের রেমিটেন্স যুদ্ধ বলা হলেও পদে পদে হয়রানি হচ্ছে দেশের এই সূর্য সন্তানরা। প্রবাস জীবন শেষ করে যেমনি দেশে ঠাঁই হচ্ছে না ভালো কোন প্রাতিষ্ঠানিক কর্মে তেমনি পাচ্ছে না বিদেশে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা। তাই দেশের সূর্যসন্তান রেমিটেন্সের যুদ্ধাদের জন্য জাতীয় বাজেটে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনার দাবি জানাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বেসরকারি কোম্পানি রেলওয়ে লাইন, সিগন্যালিং ব্যবস্থা ও স্টেশন ব্যবহার করে নিজস্ব বগি ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন পরিচালনা করতে পারবে এমন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে রেলওয়ে আইন ২০২৪ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আমরা রেলওয়ে কে বেসরকারি করণের এই সুদূর প্রসারী চক্রান্তের দীর্ঘ নিন্দ্রা জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন বিএলএফ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক শিমুল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবসার ভূঁইয়া, জেলা সভাপতি সেলিম মিয়া, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নুরুল আবছার তৌহিদ, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ মিয়া, যুগ্ন সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন সহ আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *