তজুমদ্দিনে বাকপ্রতিবন্ধী যুবক কবির হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

রাজু মাহমুদ:

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নে বাকপ্রতিবন্ধী যুবক মো. কবির রাড়ী (৩৫) হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় জনতা। শুক্রবার সকালে বাংলাবাজার ও দক্ষিণ খাসেরহাট এলাকায় হাজারো মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

নিহত কবিরের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, গত ২৮ জুলাই জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কবিরের চাচাতো ভাই এবং তাদের সহযোগীরা কবিরকে বাড়ির পাশের বাগানে ডেকে নিয়ে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখায়। ভীত-সন্ত্রস্ত কবির দৌড়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে কাঁপতে কাঁপতে পরিবারের সদস্যদের ঘটনার কথা জানান।

এর পরদিন ২৯ জুলাই সন্ধ্যা থেকে কবির নিখোঁজ ছিলেন। পরিবার খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি। নিখোঁজের তৃতীয় দিন কবিরের ঘরের সামনে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যেখানে লেখা ছিল— “কবিরকে মেরে ফেলা হয়েছে, পরবর্তী টার্গেট তার ছোট ভাই কামরুল।”

অবশেষে ১ আগস্ট সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় কবিরের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। মরদেহের হাতে-পায়ে, বুকে ও চোখে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

পরিবারের অভিযোগ, সুস্পষ্ট তথ্য থাকা সত্ত্বেও পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে “অপমৃত্যু” মামলা রুজু করে এবং আটককৃতদের অল্প সময়ের মধ্যেই ছেড়ে দেয়। পরে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বোন সুরমা বেগম বলেন, “আমার ভাই বাকপ্রতিবন্ধী ছিলেন। কারো সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল না। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ থেকেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।” তিনি অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এলাকাবাসী বলেন, মামলার তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্ট নিয়েও তারা সন্দিহান। তারা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে তজুমদ্দিন থানা ঘেরাওসহ আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এ বিষয়ে তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহাব্বত খান বলেন, “আপাতত একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *