শেখ মামুনুর রশীদ মামুন:
মাইলেম, ডিসপিরিন, সিডিল, নট্রিন, ডিসোপেন টু সহ নানা সাধারণ ওষুধকে নেশার হিসেবে ব্যবহার করছে তরুণ প্রজন্মের এক অংশ। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অনেকে কেবল কয়েকদিনের ব্যবহারের মধ্যেই আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে; ময়মনসিংহ তথা সারা দেশে কেউবা প্রায় “পাগলের মতো” হয়ে পড়ছে।
তদন্তে জানা গেছে, এদের মধ্যে অনেকেই অটোবাইক চালক, স্কুল শিক্ষার্থী, বা বিভিন্ন পেশার যুবক। সাধারণ জীবনযাত্রা, পড়াশোনা, কাজকর্ম সবই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মানসিকভাবে ধ্বংসের পাশাপাশি শারীরিকভাবে অনেকে অচল হয়ে পড়ছে।
সচেতন মহলের অভিযোগ, ফার্মেসিগুলোর দায়িত্বহীনতার কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। “ফার্মেসি গুলো কেন প্রেসক্রিপশন ছাড়া এসব ওষুধ হাতের নাগালে সরবরাহ করছে?”—প্রশ্ন তুলেছেন সমাজকর্মী ও চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের ব্যবহারের ফলে তরুণরা গুরুতর মানসিক রোগ, শারীরিক সমস্যা এবং সামাজিক বিচ্যুতি নিয়ে ভবিষ্যতে সমাজে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
নিরাপত্তা ও আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। প্রেসক্রিপশনবিহীন ওষুধ বিক্রি আইনত অপরাধ হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যথেষ্ট নজরদারি নেই। ফলে, সচেতনতার অভাব এবং নিয়ন্ত্রণহীন পরিবেশে যুব সমাজের উপর এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চিকিৎসাবিদ ও সমাজকর্মীরা জোর দিয়েছেন, রাষ্ট্রের দ্রুত পদক্ষেপ ছাড়া পরিস্থিতি ভয়াবহ থেকে ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছাবে। তাদের বক্তব্য, “যুব সমাজের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে এখনই কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা অভিযান চালানো প্রয়োজন। এভাবে ঔষধের সহজলভ্যতা ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলেও সামাজিক উদ্বেগের সৃষ্টি করতে পারে। যুব সমাজের স্বাস্থ্য ও মানসিক নিরাপত্তা রক্ষায় রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সময় নষ্ট না করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।