স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে চিকিৎসকদের প্রতি সর্তক ও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো রোগীকে অপ্রয়োজনীয় বা অনর্থক টেস্ট দেওয়ার সুযোগ নেই। একই সঙ্গে তিনি চিকিৎসকদের মধ্যস্বত্বভোগী না হওয়ারও বার্তা দেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির আয়োজন করা অনুষ্ঠানে তিনি এ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিকরা তার বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “মানুষকে বিদেশে, যেমন ভারত বা থাইল্যান্ডে, চিকিৎসা নিতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে সঠিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের সক্ষমতা রয়েছে। আমাদের দেশের চিকিৎসকরা চাইলে গুণগতমান সম্পন্ন সেবা দিতে সক্ষম।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “অনেক হাসপাতাল ওষুধ কোম্পানির পণ্য নির্দিষ্ট করে রোগীদের কিনতে বাধ্য করছে। একই সঙ্গে ডাক্তারের জন্য কোম্পানির প্রতিনিধি আলাদা সময় বরাদ্দ থাকে, যা পৃথিবীর কোনো দেশে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশ্ন আমি রেখেছি, আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল? এই অবস্থায় নিজের অবস্থান কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “দয়া করে এই অত্যাচার বন্ধ করুন। বাংলাদেশের মানুষ অনেক গরিব। বড়লোকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করলে হয়তো কিছু যায় আসে না, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের সাথে এর কোনো তুলনা নেই।”
তিনি নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “আমার বাসায় একজন ছেলে সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করছিল। সে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ১৪টি টেস্ট করাতে বাধ্য হয়েছে। পরে সে রাগ করে ঢাকার বাইরে থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় মাত্রা অনুযায়ী টেস্ট করানো হয়েছে, অতিরিক্ত কিছু করা হয়নি।”
আইন উপদেষ্টা হাসপাতাল সেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “যদি একজন নার্স মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতনে কাজ করে, তাহলে সে কীভাবে মেজাজ ঠিক রেখে রোগীদের জন্য ভালো সেবা দিতে পারবে? এই সমস্যার সমাধান করতে হলে হাসপাতাল মালিকদের মুনাফা কমিয়ে সেবা মান উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”
ড. আসিফ নজরুলের এ মন্তব্য ও আহ্বান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনি চাচ্ছেন বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা মূলত রোগী-কেন্দ্রিক হোক, আর ব্যবসায়িক স্বার্থ বা কোম্পানির প্রভাব চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রাধান্য না পাক।