রাজনীতিতে যোগদানের কোনো আগ্রহ নেই: প্রধান উপদেষ্টা

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কোনো আগ্রহ তার নেই। তিনি বলছেন, তার মনোযোগ এখন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে নিবদ্ধ।

মালয়েশিয়া সফরকালে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বারনামাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, “আমি এমন ব্যক্তি নই, যার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে। আমার মূল লক্ষ্য অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।”

ড. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বছরের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আগস্টে প্রথম বছর শেষ হয়েছে এবং এ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে গঠিত হয়েছে ঐকমত্য কমিশন। তিনি বলেন, “এই কমিশন ১১টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে কাজ করছে। চলতি মাসের শেষ নাগাদ কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত হবে, যা আরও অন্তর্ভূক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার পথে বড় অগ্রগতি হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, সংবিধান ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলাও কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, “যেমন সংসদ একক হবে নাকি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট, এ ধরনের বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন। কমিশন ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চালাচ্ছে যাতে তাদের অবস্থান বোঝা যায় এবং উন্মুক্ত আলোচনাকে উৎসাহিত করা যায়।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত লাখো মানুষের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হবে। তিনি বলেন, “দেশকে সঠিক পথে ফেরানো হয়েছে। এবারের নির্বাচন হবে বহু বছরের মধ্যে প্রথম বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন। এর আগে শেখ হাসিনার সময়কালে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, বিতর্ক ও ভোটার দমনের অভিযোগ ছিল।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১২ কোটি ৬১ লাখ নিবন্ধিত ভোটার রয়েছেন, যার মধ্যে নতুন ভোটার প্রায় ৪৫ লাখ। তাই এবারের নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

ড. ইউনূসের এ মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়, তার একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত করা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ করার মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস অর্জন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *