বরিশালে অবৈধ ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতা: রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দাপট!

বরিশাল ব্যুরোঃ

বরিশালে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন ছাড়া একাধিক অবৈধ ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এসব নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলেও সিটি করপোরেশন ও প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

কাউনিয়া এলাকায় বাচ্চু হাওলাদারের ভবন

বরিশাল সিটি করপোরেশনের আওতাধীন কাউনিয়া এলাকার ২ নং ওয়ার্ড, হাওলাদার বাড়ির পাশে মোঃ বাচ্চু হাওলাদার (৪৫) কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়াই দুইতলা ভবন নির্মাণ করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ফেচার্স সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত রইজ আহম্মেদ মান্নার প্রভাবে বাচ্চু হাওলাদার নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। সেই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি নগর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই এই অবৈধ ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করেন।

ভবনের পাশে কোনো জায়গা না রাখা, সিটি করপোরেশনের ড্রেনের ওপর সিঁড়ি নির্মাণ এবং বৈদ্যুতিক পিলারের পাশে ভবন দাঁড় করানোয় এটি এখন এলাকায় ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানুকিসিংহ রোডে আমির বিশ্বাসের বহুতল ভবন

অন্যদিকে, বরিশাল শহরের ২ নং ওয়ার্ড জানুকিসিংহ রোডে (পিছনের স্কুল সংলগ্ন) ফেচিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা আমির বিশ্বাসও কোনো অনুমোদিত প্ল্যান ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।

সচেতন নাগরিক মেহেরুননেছা মুক্তা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই দফা অভিযোগ দায়ের করেছেন—প্রথমটি ১৯ জুন ২০২৪ এবং দ্বিতীয়টি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আমির বিশ্বাস নগর ভবন নির্মাণবিধি অমান্য করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। এ নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

অভিযোগকারীর ভাষ্যে, “আইনের চোখে সবাই সমান হওয়ার কথা। কিন্তু প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগে শিথিলতা কেন, তা সাধারণ মানুষ জানতে চায়।”

রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনের নীরবতা

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে এসব অবৈধ ভবন নির্মাণ টিকিয়ে রাখা হচ্ছে। প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতায় আইনশৃঙ্খলা ও নগর ব্যবস্থাপনায় চরম অব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে।

বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এসব অবৈধ ভবন ভেঙে ফেলা হোক। অন্যথায় ভবিষ্যতে আরও অনেকে এ ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে সাহসী হয়ে উঠবে।

জনমতের দাবি

সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, অবৈধভাবে নির্মিত এসব ভবন দৃষ্টান্তমূলকভাবে ভেঙে ফেলা হলে নগরীতে শৃঙ্খলা ফিরবে এবং সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। তাদের দাবি—রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং সিটি করপোরেশনের দুর্বলতা কাটিয়ে নগর উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *