ভোলায় সপ্তাহ ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ: দুর্ভোগে ৭ উপজেলার বাসিন্দারা

মোঃ আব্দুল গফুর সিকদার: 

নিম্নচাপে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়া ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত ১৭ আগস্ট থেকে আজ (২৫ আগস্ট) সোমবার পর্যন্ত টানা সাতদিন ধরে উপকূলীয় জেলা ভোলা ও তৎসংলগ্ন জেলাগুলোর নদনদী উত্তাল রয়েছে। ফলে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সাগর উপকূলীয় এসব এলাকার নদনদী উত্তাল থাকায় দ্বীপ জেলা ভোলার অভ্যন্তরীণ ২০ রুটের নৌ-চলাচল এখনো বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

জেলায় থেমে থেমে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ায় জেলার অভ্যন্তরীণ ২০ নৌ-রুটে লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় ৭ উপজেলার যাত্রীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

ভোলার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বাসসকে জানিয়েছেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে পড়লেও সেটির প্রভাব এখনো কাটেনি।

বৈরী আবহাওয়ার ফলে জেলায় এখনো তিন নম্বর সতর্ক সংকেত চলমান রয়েছে। এসময় সমুদ্র ও নদীবন্দর এলাকায় মাছধরা ট্রলার ও নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের ফলে বিপাকে পড়েছে এখানকার কর্মজীবী মানুষ। নদী উত্তাল হওয়ায় আজ পর্যন্ত জেলার ইলিশা-লক্ষ্মীপুর, মনপুরা-ঢাকা, চরফ্যাশন-ঢাকা সহ জেলার অভ্যন্তরীণ ২০টি নৌ-রুটে ছোটবড় যাত্রীবাহী লঞ্চ ও সরকারি সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।

অভ্যন্তরীণ বন্ধ নৌরুটগুলো হচ্ছে- ইলিশা-লক্ষ্মীপুর, ইলিশা-মেহেন্দিগঞ্জ, ভোলা-বাউফল, লালমোহন-নাজিরপুর, দৌলতখান-আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-মনপুরা, মনপুরা-হাতিয়া, চরফ্যাশন-মনপুরা, চরফ্যাশন-ঢাকা, মনপুরা-ঢাকা, চরফ্যাশনের ঘোষের হাট-ঢাকা, বোরহানউদ্দিনের হাকিমউদ্দিন-ঢাকা, ভোলার ভেদুরিয়াঘাট-বরিশালের লাহার হাট, চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া-ঢালচর, চরফ্যাশনের কচ্ছিয়া-কুকরী-মুকরী, চরফ্যাশনের কচ্ছপিয়া-চরপাতিলা, চরফ্যাশনের আবুবকরপুর-দশমিনা, ভোলা সদরের তুলাতুলি-মাঝের চর, ভোলা সদরের ইলিশা-রামদাসপুর এবং ভোলা সদরের নাছির মাঝি-দৌলতখানের চর মদনপুর ইউনিয়ন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) ভোলা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মো. কাউছার আহমেদ জানান, অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর রুটে আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি বুঝে ফেরি চলাচল করছে। তাই জীবিকার তাগিদে ফেরি পারাপারে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ ভোলা অঞ্চলের বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বাসসকে জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া না কাটা পর্যন্ত জেলার অভ্যন্তরীণ নৌরুটে কোনো প্রকার লঞ্চ চলাচল করতে দেওয়া হবে না। তিনি জানান, জেলার সাত উপজেলার লঞ্চঘাটগুলোতে নৌপরিবহন নিয়ন্ত্রণে তাদের টিম কাজ করছে।

ভোলার লঞ্চ মালিক মেসার্স ব্রাদার্স নেভিগেশন কোম্পানির ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নদী উত্তাল থাকায় ডেঞ্জার জোনে তাদের কর্ণফুলী সিরিজের লঞ্চগুলোর চলাচল এখনো বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই হাতিয়া, মনপুরা, চরফ্যাশন ও হাকিমুদ্দিন ঘাট থেকে ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *