স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যারা খাল বা ভূমি দখলের সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “ভূমিদস্যুরা দেশ ও সমাজের শত্রু। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—দখলদারদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য।”
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া ঝাউবাড়ি এলাকায় শুভাঢ্যা খাল খনন ও সুরক্ষা কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলে দখলদাররা
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “একসময় এই খালটি সচল ও প্রবাহমান ছিল। মানুষ যাতায়াত করত, আর বুড়িগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হতো। কিন্তু ভূমিদস্যুরা দখল করে এটিকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করেছে। সময়মতো উদ্যোগ না নিলে আজ এই খালটির অস্তিত্ব আর থাকত না। তারা এটিকে এমনকি রাস্তায় রূপান্তরের পরিকল্পনা করেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “ভূমিদস্যুরা শুধু জলাধার দখল করেনি, পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি করেছে। এর ফলে স্থানীয় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে, জলাবদ্ধতা বেড়েছে এবং পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।”
আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সরকার খাল ও নদী রক্ষার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছে। কেউ যদি নির্দেশনা অমান্য করে দখলদারিত্ব চালিয়ে যায়, তবে তাদের গ্রেফতার করা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে প্রকৃতির স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার। এজন্য খাল-নদী দখল ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিতরা
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—
-
পানিসম্পদ এবং পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
-
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মো. হাসান উজ জামান
-
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মোকাব্বির হোসেন
-
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক
-
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ
-
ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ
-
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রীনাত ফৌজিয়া
খাল রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ
সরকার ইতিমধ্যে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় খাল উদ্ধার ও সংস্কারের ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবেই শুভাঢ্যা খাল খনন ও সুরক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খালটিকে সচল করা গেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।