মোঃ মশিউর রহমান:
টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের বড় বেলতা গ্রামে সালিশী বৈঠকে স্থানীয় ইউপি দুই সদস্যের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের বাকবিতণ্ডা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি আব্দুস ছালামের বাড়িতে সালিশরত অবস্থায় এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিকভাবে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সহোদর ভাই আজিজ সালামের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধকে গ্রাম্যভাবে মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য শালিশের আয়োজন করে। শালিশ মিমাংসার এক পর্যায়ে আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল আজিজ উত্তেজিত হয়ে উঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই লুঙ্গির কোচরা থেকে চাপাতি বের করে জাহিদ মন্ডল (২৯)-কে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারেন। সাথে থাকা রাজু, রাসেলসহ কয়েকজন মিলে এলাপাথারীভাবে মারপিট শুরু করেন।
অপরদিকে, আব্দুল আজিজের মামলা সূত্রে জানা যায়, হানিফ মন্ডলের ছেলে মোতালেব মন্ডল ও খালেক জোয়াদ্দারের ছেলে জয়নাল মন্ডলসহ ১০/১২ জন মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে আজিজের ডাকচিৎকারে স্ত্রী, সন্তান ও মেয়ে এগিয়ে আসলে মোতালেবের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে স্ত্রী জরিনাকে সজোরে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সালিশী বৈঠকে উপস্থিত থাকা পোড়াবাড়ীর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান পলু জানান, বড় বেলতা এলাকার একই পরিবারের আব্দুল আজিজ ও ছালামের সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধ মীমাংসার জন্য ছালামের বাড়িতে সালিশী বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশ চলাকালে একপর্যায়ে আজিজ উত্তেজিত হয়ে উঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আজিজ কোমর থেকে চাপাতি বের করে ছালমার ভাই জাহিদ মন্ডলকে কোপ মারে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। উপস্থিত মাতাব্বররা মিলে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে চলে আসে। ইউপি সদস্য পলু আরও জানান, সালিশে আজিজ চাপাতি বের না করলে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটতো না।
এ ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্য ওমর আলী জানান, সালিশে গোপনে অস্ত্র নিয়ে আসা গুরুতর অপরাধ। আমাদের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটবে কল্পনাও করতে পারিনি। স্থানীয় একাধিক মাতাব্বর জানায়, আব্দুল মোতালেব নামের একজন সরকারি চাকুরিজীবী ছুটিতে বাড়িতে আসেন। শুধু মাত্র মামলা জেতার জন্য একটি পক্ষ তাকে জড়িয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় আব্দুল আজিজ ও ছালমা বেগম বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। উভয় মামলার আসামিদের ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।