নওগাঁয় বিলে পোনা মাছ অবমুক্ত ও মৎস্যজীবী সমাবেশ

নওগাঁ প্রতিনিধি: 

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গুটারবিলে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন। বিলের মাঝখানে ভাসমান মঞ্চে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, মৎস্যজীবী সমাবেশ, গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চলে দিনব্যাপী এই আয়োজন। সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী, শৈলগাছী, শিকারপুর ও দুবলহাটি—এই চারটি ইউনিয়নের শতাধিক মৎস্যজীবীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

বিলের পানিতে স্থাপন করা ভাসমান মঞ্চে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। এতে অংশ নেন স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। পোনা অবমুক্তির পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, যেখানে মৎস্যজীবীদের অধিকার, আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক জলাশয়ের সংরক্ষণ নিয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম ধলু। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আজম ভিপি রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শফিউল আজম টুটুল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডি. এম. কামাল, যুবদলের সদস্য সচিব রুহুল আমিন মুক্তার, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন জাকির, সাধারণ সম্পাদক মামুন বিন ইসলাম দোহা, যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান আকাশ, সঞ্জীব কুমার, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিয় কুমার সরকারসহ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল হোসেন শাহানা প্রমুখ।

প্রধান অতিথি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দেশের প্রাণিজ সম্পদ রক্ষা এবং মাছের উৎপাদন বাড়াতে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।”

আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল গ্রামীণ জনপ্রিয় খেলা নৌকা বাইচ ও হাঁস ধরা। স্থানীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পুরো বিলজুড়ে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ।
শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামে দিনব্যাপী আয়োজনের।

আয়োজকরা জানান, “এ ধরনের আয়োজন শুধু প্রাণিজ সম্পদ সংরক্ষণেই নয়, বরং টেকসই মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলাশয় সংরক্ষণ এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “এ ধরনের আয়োজন যদি নিয়মিত হয়, তাহলে মৎস্যজীবীরা আরও উৎসাহিত হবেন এবং বিল-জলাশয়ের প্রাকৃতিক সম্পদও রক্ষা পাবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *