ঢাকা মেডিকেলের নার্সের বিপুল সম্পদ নিয়ে তোলপাড়, তদন্তের দাবি এলাকাবাসীর

স্টাফ রিপোর্টার :

টাঙ্গাইলের বাসিন্দা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মরত নার্স জামাল সিদ্দিকীর বিপুল সম্পদ নিয়ে এলাকাবাসী ও সহকর্মীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। সাধারণ চাকরি করে এত সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে এ প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাঙ্গাইলের স্থানীয়রা বলেন, একজন সাধারণ সরকারি নার্স হিসেবে চাকরি করে এত বিপুল সম্পদ গড়ে তোলা তাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তাদের দাবি, বিভিন্ন স্থানে জমি, ফ্ল্যাট, বহুতল ভবন ও গাড়ির মালিকানা থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক নার্সও একই প্রশ্ন তুলেছেন তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অথচ জামাল সিদ্দিকীর হাতে কোটি কোটি টাকার সম্পদ দেখা যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, জামাল সিদ্দিকী টাঙ্গাইল ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক জমি ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে (১) আব্দুল মাস্টারের ৪ বিঘা জমি (ক্রয়মূল্য ৮০ লাখ টাকা + দলিল খরচ ১০ লাখ = মোট ৯০ লাখ টাকা)। (২) ওয়াজেদ মাস্টারের ৩.৫ বিঘা জমি (ক্রয়মূল্য ৭০ লাখ টাকা + দলিল খরচ ১০ লাখ = মোট ৮০ লাখ টাকা)। (৩)তুলা মাস্টারের ১৪ ডিসিমাল জমি (ক্রয়মূল্য ১০ লাখ টাকা + দলিল খরচ ২ লাখ = মোট ১২ লাখ টাকা)।
(৪) মজিদ সিদ্দিকীর ২০ ডিসিমাল জমি (ক্রয়মূল্য ১৫ লাখ টাকা + দলিল খরচ ৩ লাখ = মোট ১৮ লাখ টাকা)। (৫) ইদ্রিস সিদ্দিকীর ১৮ ডিসিমাল জমি (ক্রয়মূল্য ১৫ লাখ টাকা + দলিল খরচ ২ লাখ = মোট ১৭ লাখ টাকা)।
(৬) বাছেদের ৪০ ডিসিমাল জমি (ক্রয়মূল্য ৩০ লাখ টাকা + দলিল খরচ ৬ লাখ = মোট ৩৬ লাখ টাকা)। (৭) শেফালী মেম্বারের ৪০ ডিসিমাল জমি (ক্রয়মূল্য ৫৫ লাখ টাকা + দলিল খরচ ১০ লাখ = মোট ৬৫ লাখ টাকা)। এছাড়াও কালিহাতি থানার পূর্ব বাসিন্দা সিদ্দিকবাড়িতে ৩৫ ডিসিমাল জমিতে পাঁচতলা ফাউন্ডেশন ও দুইতলা ভবন।  ঘাটাইলের ঝড়কা মহল্লায় ৬ ডিসিমাল জমির উপর পাঁচতলা ফ্ল্যাট বাসা (জমির মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা)।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ ডিসিমাল জমি (মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা) এবং পাশাপাশি ২৪ ডিসিমাল জমি (মূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন নিমতলীতে ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় ফ্ল্যাট এবং একটি প্রাইভেট কার। স্থানীয়রা বলেন, এই বিপুল সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখা দরকার। তাদের ভাষায়, একজন সাধারণ নার্সের বেতনের সঙ্গে এ ধরনের সম্পদের হিসাব মেলে না। অনেকেই দাবি করছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করা। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কয়েকজন কর্মচারীও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাধারণ চাকরি করে এত টাকার মালিক হওয়া সম্ভব নয়। তারা বলেন, “আমরা মাসের শেষে বেতনের টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাই, অথচ জামাল সিদ্দিকীর হাতে একের পর এক জমি ও ফ্ল্যাটের খবর শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি রহস্যজনক।” তবে এ ব্যাপারে জামাল সিদ্দিকীর বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *