আলমাস হোসাইন :
ঢাকার সাভারে আলোচিত দুই ছাত্র হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা জেলা সহ-সভাপতি ও তেতুলঝোড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার এসআই ইমরান হোসেন। এর আগে গত রবিবার দুপুরে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনী থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার জসিম উদ্দিন সাভারের তেতুলঝোড়া ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের মনসুর গোয়ালের ছেলে।
ছাত্র–জনতা হত্যার পটভূমি
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের গুলিতে দুই তরুণ ছাত্র নিহত হন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথম ঘটনায় নিহত হন সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সাজ্জাত হোসেন (১৯)। জানা যায়, সেদিন দুপুরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের রানা প্লাজার সামনে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও পুলিশ সদস্যদের গুলিতে সাজ্জাত ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহত সাজ্জাতের বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার জসিম উদ্দিনকে ১৭৬ নম্বর আসামি করা হয়।
অন্য ঘটনায় নিহত হন ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র ও সাভারের বাসিন্দা আবদুল আহাদ সৈকত (১৭)। তিনি সাভার থানা রোডের মুক্তির মোড়ে গুলিতে প্রাণ হারান। এই ঘটনায় নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় জসিম উদ্দিনকে ১০০ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
পুলিশি বক্তব্য
সাভার মডেল থানার এসআই ইমরান হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা আসামি জসিম উদ্দিনকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ব্যাংক কলোনী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরও বলেন, “ছাত্র–জনতা হত্যার মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তদন্তে অগ্রগতি ঘটবে। শিগগিরই আদালতে হাজির করা হবে।”
এলাকায় প্রতিক্রিয়া
সাভার ও আশপাশের এলাকায় এ গ্রেপ্তার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে মামলার অনেক আসামি গ্রেপ্তার এড়িয়ে চললেও ধীরে ধীরে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। পরিবারগুলোর প্রত্যাশা—দোষীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
উপসংহার
সাভারের এই আলোচিত দুই হত্যাকাণ্ড শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয় পর্যায়েও আলোড়ন তুলেছিল। তরুণ দুই শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ও তার প্রভাব আজও এলাকাবাসীর মনে দাগ কেটে আছে। জসিম উদ্দিনের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মামলার তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হলেও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এখনো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়।