গাজীপুরে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের নামে মানহানির মামলা।

সাইদ মৃধা :

গাজীপুরে সংবাদ প্রকাশের জেরে সম্পাদকসহ চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানিকর মামলার ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।

জানা গেছে, পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে হস্তক্ষেপের অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম রুবেলকে জড়িয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে মাজহারুল ইসলাম রুবেল বাদী হয়ে গাজীপুরের গাছা এলাকার কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— শাহীন আল মামুন, সম্পাদক ও প্রকাশক, সিএনএনবাংলা টিভি; সামসুদ্দিন জোয়েল, রিপোর্টার, সিএনএনবাংলা টিভি; মো. গোলাম কিবরিয়া, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সাপ্তাহিক জাগ্রত জনতা; মো. নুরুজ্জামান শেখ, বার্তা সম্পাদক, সাপ্তাহিক জাগ্রত জনতা; এবং মোসা. আছমা আক্তার লাকী।

সাংবাদিক মহল বলছে, ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য প্রচার করা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব। অথচ সংবাদ প্রকাশের কারণে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সাংবাদিক শাকিল বলেন, “ভুক্তভোগীর বক্তব্য প্রচার করা অপরাধ নয়। এই মামলা সাংবাদিকদের ভয় দেখিয়ে সত্য প্রকাশে বাধা দেওয়ার শামিল।”

ঢাকার ক্রাইম পত্রিকার সম্পাদক আবু সাইদ মৃধা বলেন, “ইদানীং সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বড় অন্তরায়। এজন্য সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।”

সিনিয়র সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “অপরাধের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।”

গাছা সাংবাদিক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম আরিফ বলেন, “সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা একজন সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনের জেরে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো হলে তা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করে। আমরা দ্রুত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসনের স্বার্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা অপরিহার্য। সাংবাদিকদের নির্ভয়ে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ও প্রশাসনের প্রতি তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *