মোহাম্মদ হোসেন হ্যাপী:
নারায়ণগঞ্জে হারানো ৬১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দিয়েছে জেলা পুলিশ। শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে ফোনগুলো মালিকদের মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, পিপিএম (বার) নিজ হাতে মালিকদের কাছে এসব ফোন হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, জেলা পুলিশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) শাখার দক্ষ একটি টিম পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিনের নির্দেশে হারানো মোবাইল সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) অনুসন্ধান করে এবং আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত চালিয়ে ফোনগুলো উদ্ধার করে।
অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার, আইসিটি শাখার কর্মকর্তা ও ফোর্স সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধার করা ফোনগুলো পেয়ে মালিকরা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তারা কখনও ভাবেননি হারানো ফোন ফেরত পাবেন। পুলিশের আন্তরিকতা ও প্রযুক্তিনির্ভর তৎপরতার কারণেই আজ তাদের ফোন ফিরে এসেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, “বর্তমান সময়ে মোবাইল শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনেক সময় টাকা হারানোও কষ্টের হয়, কিন্তু মোবাইল হারালে ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও, তথ্য ও ব্যাংক সংক্রান্ত ডেটা হারানোর আশঙ্কা থাকে।”
তিনি আরও বলেন, “মোবাইল হারালে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এরপর সেই জিডির কপি জেলা পুলিশের আইসিটি শাখায় জমা দিলে আমাদের বিশেষ টিম প্রযুক্তির মাধ্যমে সেটি উদ্ধারের চেষ্টা করে। ইতিমধ্যে আমরা বহু হারানো মোবাইল উদ্ধারে সফল হয়েছি।”
তিনি নাগরিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, “পুলিশ এখন জনবান্ধব সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। জনগণের আস্থা অর্জনে আমরা প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। মানুষ যেন বিপদের সময় নির্ভয়ে পুলিশের কাছে আসতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”
মোবাইলের প্রকৃত মালিকদের হাতে ফোন তুলে দেওয়ার সময় পুলিশ সুপার সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “আপনার মোবাইলের আইএমইআই নম্বর সংরক্ষণ করুন এবং হারিয়ে গেলে দ্রুত থানায় জিডি করুন। প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক সময় মোবাইল উদ্ধার করা সম্ভব হয়।”
জেলা পুলিশের এ উদ্যোগকে মানবিক ও জনবান্ধব কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা মনে করছেন, এ ধরনের কার্যক্রম পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বাড়াবে এবং অপরাধ দমনে সাধারণ মানুষও আরও সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন উদ্ধার করা ফোন মালিকদের অভিনন্দন জানান এবং ভবিষ্যতে যেকোনো সমস্যায় পুলিশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “জনগণ ও পুলিশের মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতার সেতুবন্ধনই একটি নিরাপদ সমাজ গঠনের মূল শক্তি।”