স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
রোববার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী “উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থান” বা সেফ এক্সিট নিয়ে মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট খোঁজার খবরের প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “কে কি চায়, এটা তার ব্যক্তিগত প্রশ্ন।” সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা আরও জানান, “আপনারাও তো অনেক প্রশ্ন করতে পারেন। এই বোন দেখবেন একটা প্রশ্ন করবেন, ওই বোন আর একটা করবেন। এই ভাই আর একটা প্রশ্ন করবেন।”
এসময় এক সাংবাদিক তার ব্যক্তিগত সেফ এক্সিটের প্রশ্ন করলে উপদেষ্টা বলেন, “আমার ছেলে-মেয়ে সবাই দেশে। আমি একা গিয়ে কি করবো।” তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি দেশের বাইরে সেফ এক্সিটের কোনো পরিকল্পনা করছেন না এবং তার পরিবারের সকল সদস্যই দেশের মধ্যে অবস্থান করছেন।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন, কিছু উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ বা যোগাযোগ করে ফেলেছেন এবং তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। নাহিদের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
এই বিষয়ে কথা বলার সময় উপদেষ্টারাও মন্তব্য করেছেন। ৯ অক্টোবর ফেসবুক পোস্টে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “বাহাত্তরোর্ধ্ব বছর বয়সে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা তার জন্য গভীর দুঃখের বিষয় হবে।” তিনি আরও যোগ করেছেন, বয়স ও দায়িত্বের প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টাদের উচিত দেশের মধ্যে থাকাকালীন দায়িত্ব পালন করা এবং সামাজিক ও আইনগত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পন্ন করা।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য প্রকাশ করে বলা যায়, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা এবং জাতীয় দায়িত্বের প্রতি তার দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ বা নিরাপত্তা মূলক চিন্তা কোনো পরিস্থিতিতে তার কাজ বা দায়িত্ব পালনে প্রাধান্য পাবে না।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তার এই জবাব পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উপদেষ্টারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার প্রতি তাদের দায়িত্বজনিত মনোভাব অব্যাহত আছে। এই অবস্থায় দেশের নাগরিকরা আশা করতে পারেন, উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণে থাকবে এবং প্রয়োজনীয় নীতি ও পদক্ষেপের মাধ্যমে সঠিক দিকনির্দেশনা বাস্তবায়িত হবে।