নারায়নগন্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ

প্রতিবেদক- ব্যুরো চিফ মোহাম্মদ হোসেন হ্যাপী

 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিনিধির দুভক্টোরিয়া হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে মূল লক্ষ্য ছিল ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবা এবং হাসপাতালের পরিবেশ।
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী বিপ্লব খান, জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, প্রচার সম্পাদক শুভদেব,হাসপাতালের প্রত্যেকটি ড্রেন ভাঙ্গা ময়লা আবর্জনায় ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র ওয়াশরুমগুলোতে ঢুকা যায় না বেহাশ দশা বাংলাদেশ ছাত্রফেডারেশন জেলার সাবেক সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।
হাসপাতালের পরিবেশ এবং ডেঙ্গু ওয়ার্ড পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জহিরুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিনিধি দল ভিক্টোরিয়া হাসপাতের R,m,o ডা.জহিরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে হাসপাতালের ভেতরের ড্রেনের জমে থাকা পানি, সুয়ারেজের ভাঙা পাইপ, বিভিন্ন ময়লা আবর্জনায় জমে থাকা ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র এবং হাসপাতালের ওয়াশরুমের অবস্থা দেখান।

পরিদর্শন শেষে তরিকুল সুজন বলেন, নারায়ণগঞ্জের স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ জাতীয় অর্থনীতি, রাজনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও কার্যত নারায়ণগঞ্জ অবহেলিত এবং বঞ্চিত। চিকিৎসা সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো কার্যত বহুলাংশে অসহায় এবং বহুবিধ সীমাবদ্ধতা নিয়ে চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছেন। ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে বহুদিন ধরে মাদক এবং অপরাধীচক্ররা সক্রিয় আছেন। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। পাশাপাশি নানান সংস্কার কাজে গণপূর্ত বিভাগের অবহেলা পরিস্থিতিকে আরো জটিল এবং নাজুক করে তুলেছে। আমরা ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ঢুকতেই আমাদের চোখে পরে হাসপাতালের গেইট সংলগ্ন ড্রেনে অটো চালকদের কেউ কেউ এসে প্রস্রাব করছেন। আরো ভিতরে গিয়ে আমরা দেখেছি, হাসপাতালের প্রত্যেকটি ড্রেন ভাঙ্গা, সুয়ারেজ সিষ্টেমের পাইপ ভেঙ্গে রোগীদের মল-মুত্র নানান জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। এবং ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গ সংলগ্ন পেছনের অংশে প্রচুর ময়লা আবর্জনা জমে আছে। ময়লা আবর্জনায় পুরাতন পানি পরিণত হয়েছে ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র। এছাড়াও হাসপাতালের ওয়াশরুমগুলোর কোন কোনটার দরজায় ছিটকিনি নেই, বৈদ্যুতিক সুইচ ভাঙ্গা, ওয়াশরুমের লাইট নেই, বেসিনের পানির কল ভাঙ্গা! আমরা এসব বিষয়ে আরএমও ডা. জহিরুল ইসলামকে অবহিত করি এবং তিনি আমাদের আশ্বাস দেন ছোটখাটো সংস্কারগুলো আগামী ২/১ দিনের ভেতরই তিনি সমাধান করবেন কিন্তু ড্রেনেজ এবং অবকাঠামোগত কিছু সংস্কার বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগকে জানানোর পর গণপূর্ত সংস্কার করছেন না।

ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আজকে গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তাদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তারা এর আগে খানপুর হাসপাতালে গিয়েছেন। আজকে তাদের সাথে আমি নিজেও পুরো হাসপাতালের পরিবেশ পরিদর্শন করেছি। তাদের কথা শুনেছি। তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের প্রত্যাহিক খাবারের সাথে বিশেষ কিছু ফলমূল যুক্ত করার কথা বলেছেন। পাশাপাশি পরিবেশগত কিছু কনসার্ন তারা ‘জানিয়েছেন। আমরা আশ্বস্ত করছি যেগুলো আমাদের হাতে রয়েছে তা আগামীকালকের মধ্যেই সমাধান হবে। আর অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য গণপূর্ত বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেগুলো নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি তারাও কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের যে উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটা আমরা একসাথেই মোকাবিলা করতে পারবো বলে আশা রাখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *