দৈনিক তালাস টাইমের ইমরুল কায়েস প্রতারকের কবলে সাংবাদিক, তথ্য ও অর্থ হারিয়ে অসহায় ভুক্তভোগী

স্টাফ রিপোর্টার:

দৈনিক তালাস টাইম-এর সম্পাদক পরিচয়ধারী ইমরুল কায়েস নামে এক ব্যক্তির হাতে প্রতারিত হয়েছেন সাংবাদিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। অভিযোগ রয়েছে, ইমরুল কায়েস নামধারী ওই ব্যক্তি নিজেকে পত্রিকার সম্পাদক পরিচয়ে পরিচিত হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে থাকে। প্রায় দেড় বছর ধরে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারণা করে আসছিলেন।

ভুক্তভোগী জানান, মানিকগঞ্জের বজলু নামের সাংবাদিকের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয় ইমরুল কায়েসের। আমি আমার পাশের বানিয়াঘোনা গ্রামের মিলনের মাধ্যমে দৈনিক জনতার নিউজ ওয়েবসাইট খুলে দিই। পরবর্তীতে ওয়েবসাইট আনুমানিক চার মাস যাওয়ার পর সাংবাদিক বজলু ওয়েবসাইট লিংক ভালোভাবে সাজানো না দেখে তিনি দৈনিক তালাস টাইমের সম্পাদক ইমরুল কায়েসের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেন। পরে দৈনিক তালাস টাইমের সম্পাদক পরিচয়ধারী ইমরুল কায়েসের কাছে ওয়েবসাইট লিংকসহ সকল তথ্য দিয়ে দিই। ওয়েবসাইট লিংক দেখে তিনি বলেন, “এই ডোমেইন তো ভালো নয়, আপনাকে ভালো ডোমেইন কিনে ভালো মানের ওয়েবসাইট তৈরি করে দিবো।”

পরে ওয়েবসাইট লিংক তৈরি করে দেখি ঐ ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিয়ে রাখা হয়েছে। পরে প্রশ্ন করলে তিনি আবার লিংক তার কাছ থেকে আমাকে দিয়ে বলেন, “আপনি তো ওয়েবসাইট সম্পর্কে কম বোঝেন, তাই আমি পরিচালনা করি, আপনি শুধু নিউজ দেবেন।”
প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস বিশ্বাস ধরে রাখি, তার নিউজ পাঠিয়ে দিই। পরে দৈনিক তালাস টাইমের সম্পাদক পরিচয়ধারী ইমরুল কায়েস বলেন, “আপনার ওয়েবসাইটের মেধ শেষ, আপনাকে আবার তিন হাজার টাকার মত লাগবে।” যাই হোক, তার কথা বিশ্বাস করে আমি তাৎক্ষণিক বিকাশে আনুমানিক ২ হাজার বা ২ হাজার ৬০০ টাকা পাঠাই।

আনুমানিক ছয় মাস যায়, ওয়েবসাইটের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে ছয় মাসের মধ্যে কোন ওয়েবসাইট লিংক না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করেন। শুরুতে সহযোগিতা, পরে ভুক্তভোগী দিশেহারা; টাকা নেওয়ার পর ওয়েবসাইটের লিংক আর সরবরাহ করা হয়নি।

পরবর্তীতে নানা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে (পত্রিকার ১–২০ নাম্বার পৃষ্ঠার প্রতিনিধি বানানোর কথা বলে) আরও ২ হাজার টাকা আদায় করেন। সবমিলিয়ে আনুমানিক প্রায় ৮ হাজার টাকা নেওয়ার পর ইমরুল কায়েস বিভিন্ন ফোন নম্বর থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং ভুক্তভোগীর ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র, সিভি ইত্যাদি তার বিশ্বাসের উপর নিয়ে নেন। দৈনিক তালাস টাইমের সম্পাদক পরিচয়ধারী ব্যক্তির আসল ঠিকানা ও আমার মোবাইল নম্বর ব্লক করার কারণে তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে, তার পরিচয় পাওয়ার এবং প্রতারণার ফাঁদ শনাক্ত করার জন্য আমি দৈনিক জনতার নিউজ ফেসবুক পেজে পোস্ট করি।

পরে তিনি দেখতে পেয়ে আননুন নাম্বার থেকে কল করে দোষ স্বীকার করে আমাকে উক্ত টাকা ও ওয়েবসাইট ফেরত দেবার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে দেখি ওয়েবসাইট লিংক একেক সময় একেক ধরনের। পাঠানো ওয়েবসাইটের লিংক সন্দেহ হলে বেশ কিছু লোকের সঙ্গে পরামর্শ করি এবং আমাকে যে বারবার প্রতারণা করছে তা পষ্ট ওয়েবসাইট লিংকে ধরা পড়ে।

পরবর্তী যোগাযোগে দৈনিক তালাস টাইমের সম্পাদক বলেন, “আমাকে আধা ঘন্টা সময় দিন, এই সময়ে আপনার আগের ডোমেইনের সকল তথ্য ও ওয়েবসাইট লিংক দেব।” পরে তিনি আমার আগের ডোমেইনের সকল তথ্য ও ওয়েবসাইট না দিয়ে, আমার নামে কোনো প্রতিনিধি উল্লেখ না করে পত্রিকায় ছাপানোর মত করে, তার কাছে আমার সকল তথ্য জমা ছিল, সম্প্রতি সেই তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে থাকেন।

ভুক্তভোগীর দাবি, একেক সময় একেক ধরনের ভুয়া ওয়েবসাইট লিংক পাঠিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন ইমরুল কায়েস। এমনকি নিজের পরিচয়ও গোপন রাখেন এবং বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে হুমকি দেন ও ফেসবুক পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় প্রশাসন এবং সাইবার অপরাধ দমন বিভাগে অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন প্রতারক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *