শেখ মামুনুর রশীদ মামুন:
‘হাত ধোয়ার নায়ক হোন’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় নেত্রকোনায়ও পালিত হয়েছে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০২৫। জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে বুধবার সকালে দিবসটি ঘিরে শহরে বর্ণাঢ্য র্যালি, হাত ধোয়ার প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় হাত ধোয়ার প্রদর্শনী, যেখানে শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে হাত ধোয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নায়েব আলী খান। সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাফিকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, “একটি সুস্থ সমাজ গঠনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। শিশুকাল থেকেই পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে—এটাই আজকের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম সরদার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্বজল কুমার সরকার।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা বিনতে রফিক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল আজম, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. দাউদ শরীফ, সাংবাদিক এ কে এম আব্দুল্লাহ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম ও রওনক জাহান তুবা।
বক্তারা বলেন, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, যা নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জাতীয় উৎপাদনশীলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে হাত ধোয়া সবচেয়ে কার্যকর, সহজ ও সাশ্রয়ী উপায়।
অন্যদিকে, নেত্রকোনা পৌরসভা ‘জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ উপলক্ষে নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (ইউডিজিআইপি), এলজিইডি-র সহযোগিতায় পৃথকভাবে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সার্বিকভাবে, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের এই আয়োজন নেত্রকোনায় জনসচেতনতা সৃষ্টির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ‘স্বাস্থ্যবান জাতি’ গঠনের পথে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।