নাছিমা খাতুন:
নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর ও পূর্বধলা সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া সোমেশ্বরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের উপদ্রব বন্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরব ভূমিকার সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালী চক্র নদী ও আশপাশের কৃষিজমি ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস পূর্বধলা উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ আক্কাছ বিন আব্দুল কুদ্দুস এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে জামধলা বাজার এলাকায় সোমেশ্বরী নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ ও বালু পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
অভিযোগের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখনো ধলা মূলগাঁও ইউনিয়নের জামধলা বাজার এলাকায় অবাধে বালু উত্তোলন ও পাচার চলছে। এসব বালু পূর্বধলা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মজুদ করে পাচারকারীরা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে নদীর প্রাকৃতিক গঠন নষ্ট হচ্ছে, নদীর পাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং আশপাশের ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারা প্রতিবাদ জানালে বালু ব্যবসায়ী চক্র এবং লরি ও ট্রাক মালিকরা ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেয়। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরই মধ্যে ১৭ অক্টোবর ঢাকা থেকে আগত জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা তথ্য সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে বালু ব্যবসায়ী মোঃ মোস্তফা খানের নেতৃত্বাধীন একটি চক্র তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে জেলা প্রশাসনের অবগতিতে এসি ল্যান্ড ও স্থানীয় পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে এবং বালুভর্তি ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
লিখিত অভিযোগকারী ও সচেতন মহল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পরিবেশ ও আশপাশের জনজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। দ্রুত কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।