মাধবপুরে সরকারি কলাগাছ কাটায় বিতর্ক, পিআইওসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

ফরাস ডদ্দিন: 

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন প্রাঙ্গণে সরকারি কলাগাছ কেটে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উঠেছে তীব্র বিতর্ক। এ ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. নূর মামুনসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে। অভিযোগে বলা হয়, ওই রাতে পিআইও নূর মামুন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. সোলায়মান মিয়া— তিনজন মিলে উপজেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত সরকারি কলাগাছগুলো কেটে ফেলেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা মাধবপুর বিআরডিবির (জোড়া বাড়ী) উত্তর ইউনিটের সামনে রোপণকৃত কলাগাছগুলো কেটে ফেলেন, যা সরকারি সম্পদের অপচয়। অভিযোগকারী লিখিতভাবে জানান, তিনি তার কর্মস্থল থেকে গাছ কাটার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন।

জানা যায়, পিআইও নূর মামুনের বিরুদ্ধে শুধু কলাগাছ কাটা নয়, উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মেরও অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভেতরেও আলোচনা চলছে। তার দায়িত্বে থেকে সরকারি অর্থ ও কাজের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে অনেকেই মনে করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটির পর পিআইও নূর মামুনসহ তিন কর্মকর্তা ইউএনও অফিসের এক কর্মচারীকে সিসিটিভি ফুটেজ না দেখতে নিষেধ করেন, যাতে ঘটনাটি প্রকাশ না পায়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ভেতর তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাশেম বলেন,
“সরকারি জায়গার রোপিত গাছ অনুমতি ছাড়া কেউ কাটতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন,
“পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য কলাগাছ কাটা হয়েছে, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়।”

এর আগে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা মসজিদের প্রায় ৫০টি নারিকেল ও কলা অনুমতি ছাড়া সংগ্রহের অভিযোগও আলোচনায় ছিল।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে,
“সরকারি কর্মকর্তারা যদি নিজেরাই সরকারি সম্পদ নষ্ট করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে সচেতন হবে? প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *