চুনতি শাহ মঞ্জিলে ১৯ দিন ব্যাপী মহান পবিত্র সীরাত মাহাপিল অনুষ্ঠিত

কামরুল ইসলাম:

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায় অবস্থিত শাহ মঞ্জিল এবারও পূর্ণতা পেয়েছে পবিত্র সীরাত মাহাপিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। আলহাজ্ব শাহ মাওলানা হাফেজ আহমদ (রহ.)-এর আধ্যাত্মিক উত্তরসূরি ও সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব মাওলানা শাহজাদা জামাল আহমদ (রাহ.আ.) এবং দ্বিতীয় শাহজাদা আলহাজ্ব মাওলানা শাহজাদা আব্দুল মালেক মোহাম্মদ ইবনে দিনার নাজাত (ম.জি.আ.)-এর নেতৃত্বে ১৯ দিনব্যাপী এই মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আলহাজ্ব শাহ মাওলানা হাফেজ আহমদ (রহ.) ছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর জীবন ছিল ইলম, আমল ও ত্বরিকতের আলোয় ভরপুর, এবং তিনি তার সহমর্যাদা ও জ্ঞান দিয়ে বহু শিক্ষার্থী ও মুসলমানদের পথপ্রদর্শক হয়েছেন। তাঁর বরকতময় উত্তরসূরিরা আজও শাহ মঞ্জিলকে আধ্যাত্মিক দীপ্তিতে পূর্ণ রাখছেন, আল্লাহ ও রাসূল ﷺ-এর প্রেম, আদব ও ইখলাসের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন চারদিকে।

এই মাহফিলে উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীরা আলহাজ্ব মাওলানা শাহজাদা জামাল আহমদ (রাহ.আ.) এবং আলহাজ্ব মাওলানা শাহজাদা আব্দুল মালেক মোহাম্মদ ইবনে দিনার নাজাত (ম.জি.আ.)-এর দিকনির্দেশনা ও বক্তৃতা শুনে তাৎক্ষণিক আধ্যাত্মিক প্রশান্তি অনুভব করেছেন। মাহফিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল মহানবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ-এর জীবন, শিক্ষা ও আদর্শ সম্বন্ধে মানুষকে অবগত করা এবং সমাজে নির্মল চেতনা ও আধ্যাত্মিক উদ্দীপনা সৃষ্টি করা।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, শাহ মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত এই সীরাত মাহাপিলে শুধু ধর্মপ্রাণ মুসলিমরাই নয়, আশেপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। তারা মাহফিলের মাধ্যমে নবীর জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নিজেদের জীবনকে মানবিক, আধ্যাত্মিক ও নৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন।

আধ্যাত্মিক মহাপরিচালকরা বারবার মনে করিয়েছেন, “আল্লাহর ওলিদের মৃত্যু হয় না, তাঁরা তাঁদের কর্ম, শিক্ষাসহ দো’আয় চিরকাল বেঁচে থাকেন।” এই শিক্ষাকে কেন্দ্র করে মাহফিল চলাকালীন বিভিন্ন ধর্মীয় আলোচনা, তাফসীর ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

শাহ মঞ্জিলের আধ্যাত্মিক পরিবেশ, শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষামূলক পরিবেশ এ অঞ্চলের মানুষকে আধ্যাত্মিকভাবে মজবুত করছে। স্থানীয় ও আশেপাশের এলাকা থেকে আগত মানুষরা এই মাহফিলকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

এছাড়া মাহফিলে নবীর আদর্শ অনুযায়ী জীবনের চলার পথ এবং সমাজে ন্যায়, সততা ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলেন, “শাহ মঞ্জিলের এই ১৯ দিনব্যাপী সীরাত মাহাপিল আমাদের মনে নবীর আদর্শ ও শিক্ষার আলো জাগিয়ে দেয়। এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি সামাজিক সচেতনতা ও আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধি করার এক অনন্য উদাহরণ।”

১৯ দিনব্যাপী এই মাহফিলের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ নবীর জীবনী, নৈতিক শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক দিক সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। অনুষ্ঠানটি মুসলমান সমাজের মধ্যে নবীর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আরও বৃদ্ধি করেছে।

শাহ মঞ্জিল আজও দীপ্তিমান। আল্লাহ ও রাসূল ﷺ-এর প্রেম, আদব ও ইখলাসের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। এই আধ্যাত্মিক ও শিক্ষামূলক আয়োজন স্থানীয় সমাজকে শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় সমৃদ্ধ করছে না, বরং যুবসমাজকে নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ববোধেও উদ্বুদ্ধ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *