স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
ঢাকা: রাজধানীতে নাশকতার চেষ্টা ও ঝটিকা মিছিলের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমজি)। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতাররা গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা মূলত নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতা ও কর্মী। মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মমিনুল হক টিটু (৫৪), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ইউনিট সভাপতি মো. সবুজ (৩৪), মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম (৪৬) এবং কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন আলমগীর (৫৪)।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ফয়সাল (৪৩), ৯৮নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুন্নবী ইফতেখার ওরফে রাজিব (৪৫), মহিলা লীগের সভাপতি সুলতানা রাবেয়া পপি (৪০) এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. আজিম খান (৩৭) গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক মো. ইমরান হোসেন আবির (২৮), ডেমরা শাখার সক্রিয় কর্মী মো. আব্দুল মান্নান (৫৫), ক্যান্টনমেন্ট থানার যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা (৫৪) ও যুব লীগের ১৫নং ওয়ার্ডের সক্রিয় কর্মী মো. আফজাল হোসেন রনি (৩৮) অন্তর্ভুক্ত।
গ্রেফতারদের তালিকায় আরও রয়েছেন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. ফরহাদ শেখ (৪৫), টাঙ্গাইল জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. জুয়েল আল মামুন (৪৩), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইকরামুল হক (২৫) এবং নেত্রকোনা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহম্মেদ জুবায়ের (৩৬)।
অন্যান্য গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ১৪নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম (৫২), পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুরিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু সিদ্দিক খান (৩৫), তেজগাঁও থানার ২৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন (২৫), ডেমরা থানার সারুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান খান (৪০) এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার (৬৫)।
তালিকায় আরও রয়েছেন বিএনপি-সহযোগী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের নামের পাশাপাশি যুব ও শ্রমিক লীগের সক্রিয় কর্মীরা। গ্রেফতারদের বয়স ২৫ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে বিস্তৃত।
ডিএমজি জানায়, গ্রেফতাররা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা এবং অবৈধ রাজনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রমাণের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
রাজধানীতে এই গ্রেফতার অভিযান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে নেওয়া হয়েছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ঝটিকা মিছিল ও নাশকতার ঘটনাগুলোতে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে এই বড় ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক মহল বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তবে পুলিশ বলেছে, তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।