যাত্রাবাড়ী থানা অপারেশন অফিসার খালিদ হাসানের অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বস্তিতে এলাকাবাসী

হাসান আলী :

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আওতাধীন মদিনা মসজিদের পাশের গলি সংলগ্ন এলাকায় নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে গড়ে উঠছে ‘ভিস্তা খন্দকার টাওয়ার’ নামের একটি ১০ তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক–আবাসিক ভবন। রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ভবনটিতে হুমহুম করে কাজ চলছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভবনটির নির্মাণে রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালার একাধিক ধারা স্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হলেও কোনো ধরনের নজরদারি বা বাধা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর।

রাজউক ভবন নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী ১০ তলা বা তার চেয়ে উচ্চতার ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে চারপাশে ন্যূনতম ৪০ শতাংশ জায়গা খালি রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ‘ভিস্তা খন্দকার টাওয়ার’-এর ক্ষেত্রে এই নিয়ম মোটেও মানা হয়নি। ভবনটি পাশের ভবনগুলোর সঙ্গে প্রায় গায়ে–গায়েই উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি—ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকায় কোনো খোলা জায়গা বা পর্যাপ্ত সরে দাঁড়ানোর স্পেস না থাকায় অগ্নিকাণ্ড কিংবা ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে ভবন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সাংবাদিকদের জানান, “রাজউকের বড় অফিসারদের মাধ্যমে আমরা কাজ করছি। আপনাদের চাইতে রাজউক নিয়ম ভালো জানে।”
কর্তৃপক্ষকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তিপত্র (NOC), এবং অন্যান্য বৈধ নথিপত্র দেখতে চাইলে তারা কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি। তাদের উত্তরে স্পষ্ট বলা হয়—“আপনাদের কেন দিতে হবে?”

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য—ভবনটি ইতোমধ্যে প্রায় আট তলা পর্যন্ত উঠে গেছে। এলাকাজুড়ে বিশাল আকারের এই অবৈধ নির্মাণ কাজ দৃশ্যমান হলেও এখনও পর্যন্ত রাজউক কোনো ধরনের পরিদর্শন, সতর্কতা বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী মহলের তদবিরে রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা বিষয়টি উপেক্ষা করে চলেছেন।

যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই এমন বহুতল ভবন নির্মিত হলে আশপাশের ভবনগুলোর স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন—পরিকল্পনাবিহীন ও নিয়ম বহির্ভূত ভবন নির্মাণ শুধু বাসিন্দাদের নয়, পুরো এলাকার জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

স্থানীয়দের অভিযোগ—এ ধরনের অবৈধ ভবন নির্মাণের ফলে রাস্তাঘাট সংকুচিত হচ্ছে, পানি–গ্যাস–বিদ্যুৎ লাইনে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে, এবং অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকারী দলের প্রবেশের পথও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এলাকাবাসী অবিলম্বে রাজউক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ পরিদর্শন, ভবন নির্মাণের বৈধতা যাচাই এবং নিয়ম ভঙ্গের দায়ে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা বলছেন—একটি মুসল্লি–জনবহুল মসজিদের পাশে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ ভবন দাঁড়িয়ে গেলে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সরকারি সংস্থাগুলোর উদাসীনতা এবং অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যেভাবে নিয়ম ভঙ্গ করে ভবন নির্মাণ হচ্ছে, দক্ষিণ দনিয়ার ‘ভিস্তা খন্দকার টাওয়ার’ তার আরেকটি ভয়ঙ্কর উদাহরণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *