নিজস্ব প্রতিবেদক:
টঙ্গীর কুখ্যাত ‘জাভান হোটেল’ দীর্ঘদিন ধরেই মাদক সেবন, পতিতাবৃত্তি ও অবৈধ ডান্স বারের জন্য আলোচিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, হোটেলটির পেছনে আওয়ামী লীগের ধূসর প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ—বর্তমান পরিচালক সাইমন এবং জার্মান লীগ সভাপতি শেখ বাদল—অবৈধ কার্যক্রমে পরোক্ষ প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন। অভিযোগ উঠেছে, সাইমন নিজেকে কখনো ছাত্রদলের নেতা হিসেবেও পরিচয় দেন, যেন প্রশাসনিক নজরদারি এড়ানো যায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জাভান হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে পতিতাবৃত্তি, মাদক সেবন ও বেচাকেনা এবং অবৈধ ডান্স বার পরিচালনা নিয়মিতভাবে চলছিল। এসব কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকাটি মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ায় যুবসমাজ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রশাসন, যৌথ বাহিনী ও পুলিশ একাধিকবার বৃহৎ অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে নারী–পুরুষসহ হোটেলের কর্মচারী ও কর্তৃপক্ষকে আটক করা হয়, বিয়ার, মদ ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়, এমনকি হোটেলটি সিলগালা করার ঘটনাও ঘটে। এক অভিযানের সময় পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে হোটেলের এক কর্মচারী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা যান। আরেকজন কর্মী বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন।
তবে অভিযান শেষ হওয়ার পর হোটেলটি কিছুদিন বন্ধ থাকলেও, স্থানীয়দের অভিযোগ—জাভান হোটেল আবার আগের মতোই সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং অসামাজিক কার্যকলাপ আগের মতোই চলতে থাকে। রাজনৈতিক প্রভাব, অবৈধ অর্থপ্রবাহ ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে হোটেলটির এসব অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, হোটেলের পরিচালক ও সংশ্লিষ্টরা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা দাবি করেন, তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানের প্রমাণ এসব দাবি প্রশ্নবিদ্ধ করে।
জাভান হোটেল ঘিরে মাদক বিস্তার ও পতিতাবৃত্তির কারণে টঙ্গী এলাকায় যুবসমাজ ক্রমে বিপথগামী হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন সচেতন নাগরিকরা। তাদের দাবি, রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ না হলে এ ধরনের হোটেলের অনৈতিক কার্যক্রম কোনোভাবেই থামানো সম্ভব নয়।