স্টাফ রিপোর্টার:
মিরপুর মডেল থানায় জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ছাত্র হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোঃ হেলাল মিয়া এখনও ধরা পড়েনি। মামলার সূত্রে জানা যায়, হেলাল মিয়া ও তার সহযোগীরা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেআইনি জনতার মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে সহিংসতা ও হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এইসব আসামিরা আওয়ামী লীগের পরিচিত দোসর হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে ঢাকা ও শেরপুরে ঘোরাঘুরি করে বিভিন্ন সময়ে জটিকা মিছিল ও অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মামলার ১৫১ নম্বর আসামি বর্তমানে শেরপুর জেলার দুবার চর এলাকায় অবস্থান করছে।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২ নভেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা নং ৩ নাম্বরে এটি দায়ের করা হয়। মামলার মোট আসামি সংখ্যা ১৫৫ হলেও, এ পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করা যায়নি। মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে আছেন মিরপুর মডেল থানার এসআই মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। তবে মামলার কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এখনও দেখা যায়নি।
সূত্র জানিয়েছে, মোঃ হেলাল প্রায়শই ঢাকায় এসে অপরাধ সংঘটিত করে আবার শেরপুর চলে যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এ বিষয়ে এসআই শহিদুলকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তার কাছ থেকে স্থানীয়রা শুনেছেন, “আপনাদের এত ইন্টারেস্ট কেন?”
মামলাটি করেছেন মোঃ সাজ্জাদুর রহমান, যিনি গেজেটভুক্ত জুলাই মাসের আহত যোদ্ধা। তিনি এবং সাধারণ মানুষ দাবি করেছেন, মোঃ হেলাল উদ্দিন ও অন্যান্য আসামিদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হোক।
স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আসামিরা ধরা না পড়ায় সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।”
উল্লেখযোগ্য যে, মামলা এবং তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের প্রশাসনিক দক্ষতা ও ন্যায়বিচারের ওপর প্রশ্ন তোলে। বিশেষ করে এ ধরনের রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত আসামিদের ক্ষেত্রে তদন্তে সততা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপটে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “যদি রাজনৈতিক প্রভাব থাকেই, তবুও আইন অনুযায়ী সকল আসামিকে দায়ের করা উচিত। না হলে ন্যায়বিচারহীনতার ধারা ক্রমশ বাড়বে এবং সাধারণ মানুষের আস্থা ক্ষুণ্ণ হবে।”
মিরপুর মডেল থানায় চলমান এই মামলার ভবিষ্যৎ, আসামিদের গ্রেফতারের গতি এবং প্রশাসনের ভূমিকা আইনশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ আশা করছে, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।