সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর জমি নিয়ে টাকা দেননি, বাড়ির সামনে বেড়া!

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক :  

 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন জমির মালিকরা। তাদের অভিযোগ, প্রায় ১০ বছর আগে জমি বিক্রির টাকা পরিশোধ না করেই ভবন তৈরি করেছেন জাহাঙ্গীর।

তাই ভুক্তভোগীরা বাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন দুটি সাইনবোর্ড। জাহাঙ্গীর আলমের ওই বাড়িটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নগরীর ছয়দানা এলাকায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার মা সাবেক মেয়র জায়েদা খাতুনসহ পরিবার সদস্যদের নিয়ে এক সময় বাসন সড়ক এলাকার লেহাজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেখানে ভাড়া থেকে ছয়দানা এলাকায় জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। বাড়ির সামনে তিনটি দোকান ঘর জমির মালিক বিক্রি করতে না চাইলে তিনি কিছুটা বেকায়দায় পড়ে যান। পরে জাহাঙ্গীর আলমের মামা ও স্থানীয়দের মাধ্যেমে আলোচনা করে জমির মালিক সাইফুল ইসলাম ও তার স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সোয়া ১ শতাংশ জমি ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন। প্রায় দশ বছর হয়ে গেলেও তিনি সেই জমির টাকা পাননি।

শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িটি বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।  প্রধান ফটক লাগানো।  বাড়ির সামনে সিমেন্টের খুটির মাধ্যমে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া আছে। ফলে বাসার ভেতরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামনে একটি একটি সাইনবোর্ড দেওয়া আছে। সেখানে লেখা আছে, ‘পৈতৃক সূত্রে এই জমির মালিক সাইফুল ইসলাম, মাসুদা বেগম, মাসুদ মন্ডল, মামুন মন্ডল, কামরুন নাহার ও সামসুন নাহার। এছাড়া সেখানে জমির মৌজা ও পরিমাণও লেখা আছে।’

এলাকাবাসী জানায়, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।  এতে পুড়ে যায় বাড়ির সব আসবাব। এরপর থেকে জাহাঙ্গীর ওই বাড়িতে যাননি। এই সুযোগে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে ফাঁকা থাকা জমিতে জমির মালিক সাইফুল ইসলাম বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। সেখানে নিজের এবং ভাতিজা এবং স্বজনদের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

জমির মালিক দাবিদার সাইফুল ইসলাম বলেন, ওই স্থানে মার্কেট নির্মাণ করে একটি দোকানে নিজে বসতাম এবং অন্য দুটি দোকান ভাড়া দিয়েছিলাম। ২০১৫ সালে জাহাঙ্গীর আলম পেছনের জমি কিনলেও আমার জমি ছাড়া পিছনে যেতে পারছিলেন না। জাহাঙ্গীরের মামা ও স্থানীয়দের চাপে ৩০ লাখ টাকা মূল্যে ওই জমি বিক্রি করতে রাজি হই। পরে ৫ লাখ টাকা বায়না দিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আর কোনো টাকা দেননি তিনি। তার মায়ের কাছে বেশ কয়েকবার গিয়েছি তারপরও তিনি টাকা দেননি। দেশের এখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেজন্য আমি জমি দখল করে সেখানে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। জাহাঙ্গীর তার লোকজন দিয়ে দুবার বেড়া ফেলে দিয়েছেন। এবার ভালো করে দিয়েছি পাশে সিসি ক্যামেরাও লাগিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমাকে বর্তমান বাজার মূল্যে টাকা দিলে এবং গত ১০ বছরে দোকান থেকে যে ভাড়া পেতাম সে টাকা দিলে জমি তাকে দিয়ে দেব।

এ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোন এবং হুয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

গাছা থানার ওসি আলী মো. রাশেদ বলেন, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ কেউ করেনি এবং কেউ সহযোগিতা চাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *