মোঃ সোহেল:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “আজকের শিক্ষার্থীরাই হবে আগামীর বাংলাদেশের দিশারি। তাদের মেধা, মনন ও নেতৃত্বগুণেই গড়ে উঠবে এক উন্নত, মানবিক ও জ্ঞাননির্ভর সমাজ।”
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
মেয়র বলেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিতর্ক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশ ঘটায়। তিনি জানান, কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিতর্ক, ক্যারাটে ও অন্যান্য প্রতিযোগিতায় অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চীনে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছে— যা চট্টগ্রামের জন্য গর্বের।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চসিকের উদ্যোগ তুলে ধরে মেয়র বলেন, “বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে আমরা ‘স্কুল হেলথ স্কিম’ চালু করেছি। শিক্ষার্থীরা এর আওতায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় সেবা পাবে। পর্যায়ক্রমে সব স্কুল ও কলেজকে এই স্কিমের আওতায় আনা হবে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “একটি সুস্থ মন গড়ে ওঠে সুস্থ দেহে। তাই সকালের নাস্তা খেয়ে বিদ্যালয়ে আসা, স্বাস্থ্যবিধি মানা ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।”
উন্নয়ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে ড্রেনেজ ও খাল খনন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসুরক্ষায় শিশুদের টাইফয়েড ভ্যাকসিন প্রদান, নারীদের সার্ভিক্যাল ও ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাদান ও সচেতনতা কর্মসূচিও চলমান রয়েছে।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে ডোর-টু-ডোর বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২২০০ মেট্রিক টন বর্জ্য সংগ্রহ হচ্ছে। ভবিষ্যতে শতভাগ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও গ্রিন ডিজেল উৎপাদনের উদ্যোগ চট্টগ্রামকে একটি পরিবেশবান্ধব শহরে রূপান্তরিত করবে।
চসিকের অধীনে বর্তমানে প্রায় ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ২৪টি কলেজ রয়েছে। মেয়র জানান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিও এখন চসিকের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা চাই, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মানবিক মূল্যবোধে গড়ে ওঠা যোগ্য নাগরিক তৈরি হোক, যারা আগামী দিনে দেশ গঠনে নেতৃত্ব দেবে। মানুষের মতো মানুষ হওয়াই জীবনের সর্বোচ্চ সাফল্য।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন, কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম, গভর্নিং বডির শিক্ষানুরাগী সদস্য মোঃ রফিক উদ্দিন চৌধুরী, অভিভাবক সদস্য মোঃ শাহেদ আকবর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মনজুর আলম চৌধুরী প্রমুখ।