ক্রাইম অনুসন্ধানী রিপোর্টার:
শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পশ্চিম মদনখালী থানা বিএনপি নেতার হুকুমে ইউনিয়ন বিএনপি নেতার ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, বাড়ৈখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম কে কাউছার ওরফে বাদল খান (৬০), পিতা- মৃত হাবিবুর রহমানের সাথে উপজেলা বিএনপির সদস্য মোঃ বাহারুল ইসলাম বাহার এর বিরোধ চলছিল।
গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ বেলা অনুমান ১২:৪৫ মিনিটে মদনখালী সালাম মাষ্টারের বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার ওপর দিয়ে যাওয়ার পথে পূর্ব থেকে উৎপতে থাকা সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি মারধর করে লাঠি এবং বিভিন্ন ভোতা অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাভ ফুলা জখম করেন।
এ ঘটনায় বিএনপি নেতা কাওছার খান বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য মোঃ বাহারুল ইসলাম (পিতা মৃত শেখ পিয়ার আলী)কে হুকুমের আসামি করে মুন্সিগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেন। অন্যান্য আসামিরা হলেন মোঃ সুজন (২৩), পিতা আব্দুল ওহাব; মোঃ মানিক (২৫), পিতা মোঃ মোশারফ হোসেন, সর্বসাং- মদনখালী, ওয়ার্ড নং ০৫, ইউপি- বাড়ৈখালী, থানা- শ্রীনগর, জেলা- মুন্সীগঞ্জ সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিবাদী শেখ বাহারকে জোরপূর্বক মদনখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি বানানোর চেষ্টা করা হলে বাদীসহ এলাকার আরো অনেকে বিরোধিতা করেন। এরপর বিবাদীগণসহ প্রায় ৭/৮ জন তাদের উপর ক্ষুব্ধ হন। এই ঘটনার জের ধরে গত ১০ আগস্ট ২০২৫ বেলা অনুমান ১১:৩০ ঘটিকায় তারা কাওছার খানের মেজো ছেলে রায়হান খান (২৪) কে মারধরসহ বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেন। তিনি বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ কোর্টে সি আর মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-৬৮১/২০২৫, ধারা- ৩৮১/৩৪২/৩২৪/৩২৮/৩০৭/৩৪/৫০৬(২)।
তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শিত হওয়ায় পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে মুন্সিগঞ্জ কোর্টে পিটিশন মামলা নং-৩৭০/২০২৫, ধারা- ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭/১৭৭ (সি) দায়ের করেন। বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসলেও তিনি মামলা তুলে না নেওয়ায় হামলা চালানো হয়।
এজাহার সূত্রে আরও জানা যায়, বিবাদীরা বিভিন্ন সময় নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন এবং ইয়াবার ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা এলাকায় মারামারি, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাদের ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পান না।
এ বিষয়ে মামলার আসামি মদনখালী উচ্চ বিদ্যালয় এডহক কমিটির সভাপতি এবং শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য মোঃ বাহারুল ইসলাম বলেন, মারামারি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন, তবে বড় ধরনের আঘাত করা হয়নি, সামান্য কিল-ঘুষি হয়েছে। তিনি জানান, বাদল খান থানায় মামলা করতে গেলে ওসি সাহেব দলের লোক জানতে পেরে মামলা গ্রহণ করেননি এবং স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করতে বলেছেন। তিনি আরও বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা কয়েকজন মিলিত হয়ে সালাম মাষ্টারের বাড়ির সামনে তার অটো থামিয়ে জিজ্ঞেস করেছে কেন মামলা দিয়েছেন। সেই সময় কিছুটা চিল্লাপাল্লা হয়েছে, তবে কেউ হাত তোলেনি।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজমুল হুদার জানান, এটি এসআই আলমগীর ইতিমধ্যে আদালতে তদন্তের জন্য প্রি-আর দিয়েছেন। অনুমতি মিললে তদন্তে পাওয়া সাক্ষ্য-প্রমাণ কোর্টে জমা দেওয়া হবে।